উত্তর ঃ বিশ্ব উষ্ণায়ন হল জলবায়ু পরিবর্তনের একটি বিশেষ ঘটনা। সাধারণত সময় নিরপেক্ষ হলেও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বলতে মূলত ইদানীং কালের উষ্ণতা বৃদ্ধিকেই নির্দেশ করা হয় এবং এটি মানুষের কার্যক্রমের প্রভাবে ঘটেছে। জলবায়ুর পরিবর্তন বলতে জলবায়ুর বিভিন্নতাকে বোঝানো হয়। কিছু কিছু সংগঠন মানুষের কারণে সৃষ্ট পরিবর্তন সমূহকে মনুষ্যসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন বলে।
২. Global Warming বা বিশ্ব উষ্ণায়ন বলতে কি বোঝ?
উত্তর ঃ পরিবেশ দূষণের ফলে বায়ুমণ্ডলের গ্রিনহাউস গ্যাসের ঘনত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রিনহাউস এফেক্টের প্রত্যক্ষ ফলাফল হিসাবে পৃথিবীর গড় উষ্ণতা বিপদজনক ভাবে বেড়ে চলেছে। সারা বিশ্বজুড়ে উষ্ণতা বৃদ্ধির এই প্রবণতাকে Global Warming বলে।
৩. বিশ্বায়ন কাকে বলে?
উত্তর ঃ দেশ বিদেশের বেড়া ডিঙিয়ে সারা পৃথিবীতে বাণিজ্য ও প্রযুক্তির বিস্তার এবং সমগ্র বিশ্বের বাজারকে যুক্ত করার নাম হল বিশ্বায়ন। জোসেফ স্টিগলাইজ-এর মতে পরিবহণ ও যোগাযোগের উন্নতি, ব্যয় হ্রাস, দেশগুলির মধ্যে সেবা পুঁজি দ্রব্য জ্ঞান-বিজ্ঞান ইত্যাদি মনুষ্যকৃত বাধানিষেধ তুলে নেওয়ার ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্র ও জনসম্পদের মধ্যে গড়ে ওঠা গভীর একাত্মবোধ হল বিশ্বায়ন।
৪. আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার কাকে বলে?
উত্তর ঃ সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের একটি বহু উদ্দেশ্য সাধক সংস্থা হল আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার। অর্থভাণ্ডার গঠনের উদ্দেশ্য হল আর্থিক বিষয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার পরিবেশ গড়ে তোলা।
৫. বিশ্বায়নের একটি কুফল লেখ।
উত্তর ঃ বিশ্বায়িত ব্যবসা বাণিজ্যের কারণে কিছু কিছু দেশ বিশেষ বিশেষ দ্রব্য সামগ্রী উৎপাদনের ওপর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে। যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ সামগ্রী বা ঔষধ উৎপাদনের রাসায়নিক পণ্য সামগ্রী, প্রাণ প্রযুক্তি প্রভৃতি। বিপরীত ক্রমে অন্য কোন দেশের উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ।
৬. বিশ্বায়নের একটি সুফল লেখ।
উত্তর ঃ অর্থ নৈতিক বিশ্বায়ন অনেকাংশে উদারনৈতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার আন্তর্জাতিকীকরণ হিসাবে প্রতিপন্ন হয়। এই প্রক্রিয়ায় উন্মুক্ত বাজার ব্যবস্থা, দ্রব্য সামগ্রী এবং শ্রমের জন্য প্রতিযোগিতার ওপর জোর দেওয়া হয়।
৭. উদারীকরণ কাকে বলে?
উত্তর ঃ দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে সরকারি প্রভাব থেকে মুক্ত রাখার নাম উদারীকরণ। এতে দেশের অর্থনীতিকে সরকারি বিধিনিষেধ মুক্ত রাখা হয়। এই নীতি অনুযায়ী যে সরকার কম কাজ করে সেই সরকারই সর্বশ্রেষ্ঠ।
৮. ভারতে বিশ্বায়নের সূচনা হয় কবে থেকে?
উত্তর ঃ ১৯৯১ সাল থেকে ভারতে বিশ্বায়নের সূচনা হয়।
৯. বিশ্বায়নের সমর্থনকারী কয়েকটি দেশের নাম লেখ।
উত্তর ঃ বিশ্বায়নের সমর্থনকারী কয়েকটি দেশ হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জাপান।
১০. কত সালে কোন কোন দেশের মধ্যে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়?
উত্তর ঃ ১৯৬০ সালে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে।
১১. বিশ্বব্যাংকের দুটি প্রধান কাজ উল্লেখ করো।
উত্তর ঃ (ক) বিশ্বব্যাংকের প্রধান কাজ হল উৎপাদন বৃদ্ধি বা অন্যান্য উদ্দেশ্যে সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে ঋণ প্রদান করা।
(খ) ঋণ প্রদান ছাড়াও বিশ্বব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল কারিগরি ক্ষেত্রকে দক্ষ ও সমস্যামুক্ত রাখার জন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে বিশেষত অনুন্নত দেশগুলিকে কারিগরি সাহায্য প্রদান।
১২. বিশ্বায়নের কয়েকটি মৌলিক নীতি উল্লেখ করো।
উত্তর ঃ বিশ্বায়নের মৌলিক নীতি হল -
(i) উৎপাদনের ক্ষেত্রে কোন ভর্তুকি থাকবে না।
(ii) কোন ক্ষেত্রে বিনিয়োগের পরিমাণ কত হবে, সেটা নির্ধারণ করার দায়িত্ব থাকবে বাজারের ওপর।
(iii) সরকারি সংস্থার চেয়ে বেসরকারি সংস্থা ব্যবস্থাপনার দিক থেকে বেশি দক্ষ।
১৩. মুক্ত বাজার অর্থনীতি কি?
উত্তর ঃ বিশ্বায়ন ও উদারীকরণের মিলিত রুপ হল মুক্ত বাজার অর্থনীতি। এই নীতি অনুযায়ী সরকার অযথা হস্তক্ষেপ মুক্ত হয়ে সারা পৃথিবী ব্যাপী বিস্তৃত বাজার প্রতিযোগিতার দ্বারা অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি নির্ধারিত হয়।
১৪. বিশ্বায়নের নীতি ভারতীয় অর্থনীতির ওপর যে প্রভাব ফেলেছে তা উল্লেখ করো।
উত্তর ঃ (i) টাকার বহির্মূল্য হ্রাস।
(ii) আমদানি শুল্কের হাড় কমানো।
(iii) একচেটিয়া কোম্পানি ও বাণিজ্য গোষ্ঠীকে অবাধ বিনিয়োগের সুযোগ করে দেওয়া।
(iv) বিদেশি বিনিয়োগের ওপর থেকে শর্ত তুলে নেওয়া।
১৫. আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের দুটি প্রধান কাজ উল্লেখ করো।
উত্তর ঃ (i) সদস্য রাষ্ট্রগুলির বাণিজ্যের ভারসাম্যহীনতা দুর করতে শর্ত সাপেক্ষে তাদের ঋণ প্রদান।
(ii) আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের বিস্তার ও স্থিতিশীল বিনিয়োগ ব্যবস্থার সৃষ্টির ক্ষেত্রে তার সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে উৎসাহ প্রদান করে থাকে।
১৬. আন্তর্জাতিক Finance Corporation কি?
উত্তর ঃ যে নীতি দ্বারা বিশ্ব ব্যাংক নারী ও শিশুকল্যাণ স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পুষ্টি, পরিবার পরিকল্পনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলির উন্নতির ওপর জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তার নাম গনমুখী নীতি। এই নীতির দ্বারা সমগ্র বিশ্ব থেকে দারিদ্র দূরীকরণ ও খাদ্য সমস্যা নিবারনের কথা বলা হয়।
১৭. GATT কি?
উত্তর ঃ ১৯৪৭ সালে বিশ্বের উন্নত ১২ টি দেশের প্রতিনিধিবর্গ নিজেদের মধ্যে বহুপাক্ষিক বাণিজ্যিক প্রসার ঘটানোর উদ্দেশ্যে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে মিলিত হয়ে একটি চুক্তি সম্পাদন করে যা GATT নামে পরিচিত। GATT গঠিত হওয়ার উদ্দেশ্য ছিল সদস্য রাষ্ট্রসমূহের অবাধ এবং পক্ষপাতহীন বাণিজ্য বিস্তার ঘটানো।
১৮. Trade mark কাকে বলে?
উত্তর ঃ উৎপাদিত পণ্যের বাণিজ্যিক নাম বা চিহ্নকে বলে Trade mark. প্রত্যেক বড় কোম্পানি গুলি তাদের উৎপাদিত পণ্যে একটি নিজস্ব চিহ্ন বা Logo ব্যবহার করে। Trade mark বলতে কোম্পানির এই চিহ্ন বা Logo -কে বোঝায়।
১৯. ভারতে পেটেন্ট আইন কোন সালে প্রণীত হয়? এই আইন অনুযায়ী পেটেন্টের সময়সীমা কত ছিল?
উত্তর ঃ ভারতে পেটেন্ট আইন প্রণীত হয় ১৯৭০ সালে। এর সময়সীমা ছিল ১৪ বছর।
২০. বিশ্ব ব্যাংকের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান কি?
উত্তর ঃ বিশ্ব ব্যাংকের এই প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের নানা শিক্ষামূলক কোর্সের দ্বারা প্রশিক্ষণ দেয়। এই কোর্সে ভারত থেকে অসংখ্য সরকারি আধিকারিক শিক্ষা দিয়েছেন।
২১. বিশ্ব ব্যাংকের কার্যনির্বাহী পরিচালক মণ্ডলী কি?
উত্তর ঃ ২২ জন সদস্য বিশিষ্ট একটি পর্ষদের ওপর বিশ্ব ব্যাংকের কার্যসম্পাদনের দায়িত্ব থাকে। এই ২২ জনের মধ্যে ৫ জন আসে বৃহৎ শক্তিধর রাষ্ট্রগুলি থেকে। বাকি ১৭ জন নির্বাচিত হন অন্যান্য রাষ্ট্র থেকে। এই নির্বাচিত সদস্যদের কার্যকালের মেয়াদ হয় ২ বছর।