প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা, আজ আমি তোমাদের সাথে শেয়ার করব "ফ্রাঙ্কফুর্ট পার্লামেন্ট সম্পর্কে আলোচনা করো" -এই প্রশ্নটি।
১৮১৫ খ্রিস্টাব্দের ভিয়েনা সম্মেলনের পর থেকে বহুধা বিভক্ত জার্মানির ঐক্যের দাবিতে চারিদিকে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এমতাবস্থায় জার্মানির ঐক্য আন্দোলনের সর্বপ্রথম বড়ো পদক্ষেপ ছিল ফ্রাঙ্কফুর্ট পার্লামেন্ট। এটি গঠন করা হয়েছিল ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে।
পার্লামেন্ট গঠন ঃ ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দের ফ্রান্সে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের সময় বিভিন্ন জার্মান রাজ্য থেকে নির্বাচিত ৫৮৬ জন প্রতিনিধিকে নিয়ে একটি সভা গঠন করা হয়। ১৮ মে, ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরে এই সভার অধিবেশন বসে তাই এটিকে " ফ্রাঙ্কফুর্ট পার্লামেন্ট" নামে অভিহিত করা হয়।
ফ্রাঙ্কফুর্ট পার্লামেন্ট গঠনের উদ্দেশ্য ঃ ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ফ্রাঙ্কফুর্ট পার্লামেন্ট গঠনের প্রধান দুটি উদ্দেশ্য হল -
(i) সমগ্র জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করা।
(ii) ঐক্যবদ্ধ জার্মানির জন্য নতুন একটি সংবিধান তৈরি করা।
প্রস্তাব ঃ এই পার্লামেন্ট দীর্ঘ এক বছর ধরে আলোচনা চালায় এবং অবশেষে প্রাশিয়ার রাজা চতুর্থ ফ্রেডরিখ উইলিয়ামকে ঐক্যবদ্ধ জার্মানির রাজপদে আসীন হওয়ার জন্য আবেদন জানায়। প্রাশিয়ার রাজা চতুর্থ ফ্রেডরিখ উইলিয়াম ছিলেন রাজতন্ত্রে বিশ্বাসী, তাই তিনি ফ্রাঙ্কফুর্ট পার্লামেন্টের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
অবসান ঃ ফ্রাঙ্কফুর্ট পার্লামেন্ট গঠিত হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই বিভিন্ন কারণকে কেন্দ্র করে এটি ভেঙে যায়। কারণগুলি নিন্মে আলোচনা করা হল -
(i) অস্ট্রিয়া জার্মানির বিদ্রোহকে দমন করে ফেলে।
(ii) বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধিদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা যায়।
(iii) ফ্রাঙ্কফুর্ট পার্লামেন্টে সাধারণ কৃষক, শ্রমিকদের স্থান ছিল না। তাই স্বাভাবিক ভাবেই এই পার্লামেন্ট প্রকৃত জনসমর্থন পায়নি।
গুরুত্ব ঃ ফ্রাঙ্কফুর্ট পার্লামেন্ট ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও এর গুরুত্বকে অস্বীকার করা যায় না। কারণ এই পার্লামেন্ট সমগ্র জার্মান জাতির মনোজগতে একটি ঐক্যের বন্ধন সৃষ্টি করতে পেরেছিল।
মূল্যায়ন ঃ জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রথম পর্বে ফ্রাঙ্কফুর্ট পার্লামেন্টের ভুমিকাকে কোনভাবেই অস্বীকার করা যায়না। এপ্রসঙ্গে ঐতিহাসিক কেটেলবি বলেছেন, ফ্রাঙ্কফুর্ট পার্লামেন্ট হল "বিপ্লবী জাতীয়তাবাদের প্রস্ফুটিত ফুল"।
আরও পড়ুন ঃ