রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য গুলি কি কি

রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য -

অধ্যাপক গার্নার -এর মতে, রাষ্ট্র বলতে বোঝায় অল্প বা বহুসংখ্যক ব্যক্তি নিয়ে গঠিত এমন এক জনসমাজ যা নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে স্থায়ীভাবে বাস করে, যা বহিঃশক্তির নিয়ন্ত্রণমুক্ত এবং যার একটি সুসংগঠিত শাসনব্যবস্থা আছে, যার প্রতি দেশের অধিবাসীগণের অধিকাংশ স্বভাবজাত আনুগত্য প্রদর্শন করে। নিন্মে রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করা হল -


অধ্যাপক গার্নারের দেওয়া রাষ্ট্রের সংজ্ঞাটি বিশ্লেষণ করলে রাষ্ট্রের চারটি মূল বৈশিষ্ট্য বা উপাদান লক্ষ্য করা যায়। এগুলি হল (i) জনসমষ্টি (ii) নির্দিষ্ট ভূখণ্ড (iii) সরকার এবং (iv) সার্বভৌমিকতা। নিন্মে এগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল -

     (i) জনসমষ্টি ঃ যেহেতু রাষ্ট্র একটি মানবীয় প্রতিষ্ঠান তাই জনসমষ্টি রাষ্ট্রের একটি অপরিহার্য উপাদান এবং জনসমষ্টি বা মানুষ ছাড়া রাষ্ট্রের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। 


     (ii) নির্দিষ্ট ভূখণ্ড ঃ যেদিন থেকে মানুষ যাযাবর জীবন ছেড়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছে, বলা যায় সেদিন থেকেই মানুষ রাষ্ট্র গঠনের পথে এগোতে শুরু করেছে। তাই বলা যায় নির্দিষ্ট ভূখণ্ড হল রাষ্ট্র গঠনের একটি অপরিহার্য উপাদান।

     (iii) সরকার ঃ রাষ্ট্র গঠনের উল্লেখযোগ্য তৃতীয় উপাদানটি হল সরকার বা শাসনতন্ত্র। কোন নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে বসবাসকারী জনসমষ্টিকেই রাষ্ট্র বলা যায় না, সেই জনসমষ্টিকে সমাজজীবনে শৃঙ্খলা এবং সংঘবদ্ধ করে রাখার জন্য প্রয়োজন হয় একটি যন্ত্র বা প্রতিষ্ঠানের। আর এই যন্ত্র বা প্রতিষ্ঠান হল সেই দেশের সরকার। যারা আইন কানুন, শাসন, বিচারকার্য ইত্যাদির সাহায্যে সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষা করে। 


     (iv) সার্বভৌমিকতা ঃ সার্বভৌমিকতা হল রাষ্ট্রের চতুর্থ এবং সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। রাষ্ট্রকে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বা সংঘ থেকে পৃথক করার কাজ করে সার্বভৌমিকতা। রাষ্ট্র তার সার্বভৌম ক্ষমতার ভিত্তিতেই আইনকানুন প্রণয়ন করে থাকে। সার্বভৌমিকতার দুটি দিক লক্ষ্য করা যায়। যথা - অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক।

রাষ্ট্রের এই চারটি মূল উপাদান ছাড়াও বর্তমান রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ রাষ্ট্রের আরও দুটি উপাদানের কথা উল্লেখ করেছেন। যথা - (i) স্থায়িত্ব এবং (ii) আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। তবে এই দুটি উপাদান সম্পর্কে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মধ্যে মতপার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।  

Post a Comment

Previous Post Next Post