১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের প্রকৃতি সম্পর্কে বিভিন্ন ঐতিহাসিকের মতামত

প্রিয় ছাত্রছাত্রী, আজ আমি তোমাদের সাথে শেয়ার করব ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের সিপাহী বিদ্রোহ বা মহাবিদ্রোহের প্রকৃতি সম্পর্কে বিভিন্ন ঐতিহাসিক যে মতামত প্রদান করেছেন সেই বিষয়টি। যেহেতু ভারতের ইতিহাসে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেহেতু এই বিদ্রোহ সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের দেওয়া বিভিন্ন মতামতগুলিও গুরুত্বপূর্ণ।

সিপাহী বিদ্রোহ বা মহাবিদ্রোহের প্রকৃতি সম্পর্কে বিভিন্ন ঐতিহাসিক -এর মতামত -


১. বিপ্লবী বিনায়ক দামোদর সাভারকর (বীর সাভারকার) তাঁর 'দ্য ইন্ডিয়ান ওয়ার অব ইন্ডিপেন্ডেন্স' (১৯০৯ খ্রিঃ) নামক গ্রন্থে তিনি ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহকে " ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ " বলে গণ্য করেছেন। 


২. স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর মতে, "এই বিদ্রোহ শুধুমাত্র সিপাহীদের বিদ্রোহ ছিল না বরং তা ভারতের অসামরিক বিদ্রোহের ভিত্তি রচনা করেছিল। প্রকৃতিগতভাবে সামন্ততান্ত্রিক হলেও কিছু জাতীয়তাবাদী উপাদান এই বিদ্রোহে লক্ষ্য করা গিয়েছিল"। 

৩. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের সিপাহী বিদ্রোহ বা মহাবিদ্রোহের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে ঐতিহাসিক আউট্রাম, ডাফ, রবার্টসন, টোরি দলের নেতা ডিসরেলি, সমাজতন্ত্রবিদ কার্ল মার্কস বলেছেন এটি ছিল, "একটি জাতীয় বিদ্রোহ"। 


৪. বিপানচন্দ্র -বলেছেন ,"এই বিদ্রোহকটিতে সামগ্রিকভাবে ঐক্যবদ্ধ ও সুসংহত পরিকল্পনা এবং রূপায়নের ঘাটতি ছিল "। 

৫. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের প্রকৃতি সম্পর্কে আর সি মজুমদার বলেছেন,"এই বিদ্রোহ না প্রথম, না জাতীয় ,না স্বাধীনতার যুদ্ধ "।

৬. মহাবিদ্রোহের প্রকৃতি সম্পর্কে কিশোরীচাঁদ মিত্র বলেছেন, "এই বিদ্রোহ ছিল একান্তআভবেই সিপাহীদের অভ্যুত্থান"।


৭. ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেছেন, এই বিদ্রোহ ছিল ক্ষয়িষ্ণু অভিজাত শ্রেণি ও মৃতপ্রায় সামন্তশ্রেণির মৃত্যুকালীন আর্তনাদ।

৮. হরিশ্চন্দ্র মুখোপাধ্যায় ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে 'মহান বিপ্লব' বলে অভিহিত করেছেন।

৯. ঐতিহাসিক শশিভূষণ চৌধুরী বলেছেন যে, এটি ছিল সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী জাতীয় যুদ্ধ।


১০. নর্টন, ম্যালেসন, বল, জন কে প্রমুখ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে একটি গণবিদ্রোহ বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন।

আরও পড়ুন -

Post a Comment

Previous Post Next Post