রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিজ্ঞান পদবাচ্য -
ইতিহাস পর্যালোচনা ও সূত্র বিশ্লেষণ ঃ ইতিহাস ও সমাজজীবনের থেকে উপকরণ সংগ্রহ করে মানুষ রাজনৈতিক আচার-আচরণের বিচার-বিশ্লেষণ করে থাকে। মানুষের স্বতন্ত্র ইচ্ছা এবং স্বাধীনতার সঙ্গে সামাজিক আচার-আচরণের কিছু সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। আর এই সাদৃশ্যের জন্যই রাজনৈতিক জীবনে সমাজের বিকাশ ও গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে কিছু সাধারণ সূত্র নির্ধারণ করা সম্ভব হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ রাষ্ট্রের তুলনামূলক ইতিহাস আলোচনা, সূত্র বিশ্লেষণের মাধ্যমে এবং শাসনব্যবস্থার গতিপ্রকৃতি লক্ষ্য করে যে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন সেটি মোটামুটি সত্য বলে প্রমানিত হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পেরিক্লিস, প্লেটো, অ্যারিস্টটল -এর সময় থেকে ব্রাইস, ফ্রেডারিখ এঙ্গেলস ও কার্ল মার্কস এর সময় পর্যন্ত গণতন্ত্র সম্পর্কে য সমস্ত নীতি নির্ধারণ করা হয়েছে, সেগুলি সত্য বলে প্রমানিত হয়েছে। এবিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।
গণিত পরিসংখ্যানের প্রয়োগ ঃ বর্তমান সময়ে গণিত এবং পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে আচরণবাদী রাজনিতিক বিজ্ঞানগণ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলচনাকে মূল্য-নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ করে তুলেছেন। ফলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনা হয়েছে বিজ্ঞানসম্মত। বস্তুবাদের দৃষ্টিতে সামাজিক পরিবর্তন এবং রাষ্ট্রের গতিপ্রকৃতির বৈজ্ঞানিক সত্য আবিষ্কার করে যে সব রাজনীতিকগণ সমাজবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিপ্লব এনেছেন তারা হলেন কার্ল মার্কস এবং ফ্রেডারিখ এঙ্গেলস। তাদের বৈজ্ঞানিক সত্য শুধু তত্ত্বের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং তা বাস্তবেও প্রমানিত হয়েছে। 'রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিজ্ঞান পদবাচ্য' - কিনা সেই তত্ত্বের সত্যতা প্রমাণ পেয়েছে সোভিয়েত ইউনিয়ন, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন-সহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশে।
উপরে উল্লিখিত আলোচনার ভিত্তিতে বলা যায় যে, পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষণ, বিশ্লেষণ, গণিত ও পরিসংখ্যানের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক বিজ্ঞানীদের দেওয়া তত্ত্ব ও প্রমানের ভিত্তিতে যে সত্য নির্ধারণ হয়েছে তাতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান না বলার কোন যুক্তি নেই। অর্থাৎ বলা যায়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিজ্ঞান পদবাচ্য।