ভারত ছাড়ো আন্দোলন -
১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বব্যাপী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে ওঠে। এর ফলে ভারতের রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও পরিবর্তন দেখা যায়। ভারতীয়দের অনুমোদন ছাড়াই ব্রিটিশ সরকার ভারতকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে ফেলে। এর ফলে ভারতীয়রা ক্ষুব্ধ হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুকাল আগে পর্যন্ত গান্ধীজী রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন। কিন্তু এই সঙ্কটময়কালে গান্ধীজী আবার নেতৃত্ব দিতে ফিরে আসেন। তিনি তাঁর "হরিজন" পত্রিকায় একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন এবং সেখানে তিনি ইংরেজদের ভারত ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন। এরপরই শুরু হয় ভারত ছাড়ো আন্দোলনের কর্মসূচি। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ৮ আগস্ট ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস 'ভারত ছাড়ো' আন্দোলনের ডাক দেয়। ভারত ছাড়ো আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গান্ধীজী ঘোষণা করেন, "আমরা স্বাধীনতা অর্জন করব অথবা মৃত্যুবরণ করব"। তিনি বলেন "করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে" (We shall do or die. We shall either free India or die in the attempt.)। সমগ্র ভারতবাসীর উদ্দেশ্যে গান্ধীজী ঘোষণা করেছিলেন - আপনাদের মনে করতে হবে যে আপনারা প্রত্যেকে মুক্ত। আপনাদের মনে রাখতে হবে আপনারা সাম্রাজ্যবাদের পদানত নন। ভারত ছাড়ো আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে গান্ধীজী-সহ কংগ্রেসের অধিকাংশ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর মুক্তিলাভের পর সাম্প্রদায়িক সমস্যা সমাধানের জন্য মহম্মদ আলি জিন্নার সঙ্গে গান্ধীজী আলাপ-আলোচনা চালান। কিন্তু গান্ধীজীর এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল।