নাৎসিবাদ বলতে কি বোঝ

নাৎসিবাদ -

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুতে অর্থাৎ বিংশ শতকের প্রথমার্ধে জার্মানিতে একটি নতুন ধরণের সমাজতান্ত্রিক মতবাদের উদ্ভব ঘটে, যা ‘নাৎসিবাদ’ নামে পরিচিত। জার্মানিতে নাৎসিবাদের বিকাশ ঘটেছিল এডলফ হিটলারের হাত ধরে। যিনি পরবর্তীকালে জার্মানির জনপ্রিয় নেতা হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত জার্মানিতে নাৎসিবাদ প্রবলভাবে সক্রিয় ছিল। এই সময় নাৎসিবাদ হয়ে উঠেছিল জার্মানির প্রধান রাষ্ট্রীয় মতবাদ। নাৎসি নেতা এডলফ হিটলারের আত্মজীবনী ‘মেঁই ক্যাম্ফ’ থেকে নাৎসিবাদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়।


      নাৎসি দলের প্রধান নেতাকে ফ্যুয়েরার বলা হত, যিনি ছিলেন অভ্রান্ত। দলনেতা বা ফ্যুয়েরার প্রতি অন্ধ আনুগত্য প্রদর্শন করাই ছিল নাৎসি দলের প্রধান নিয়ম। নাৎসি দলের সদস্যদের ফ্যুয়েরার প্রদত্ত সমস্ত নির্দেশগুলিকে বিনা প্রশ্নে মেনে নিতে হত। নাৎসিদের মতে পৃথিবীর সকল মতবাদ ভ্রান্ত, শুধু তাদের মতবাদই সঠিক এবং অভ্রান্ত। একনায়কতান্ত্রিকতা ও ব্যক্তি পূজা ছিল নাৎসিবাদের অন্যতম মূল নীতি। 

     নাৎসিবাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল সমগ্র বিশ্বে জার্মান জাতির শ্রেষ্ঠত্ব প্রচার করা। নাৎসিবাদীরা শ্বেতাঙ্গদের  বিশ্বের প্রধান জাতি হিসাবে মনে করতেন এবং তাদের মতে শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ছিল জার্মান জাতি। কারণ তাদের ধারণা, একমাত্র বিশুদ্ধ আর্য জাতির রক্ত শুধুমাত্র জার্মান জাতির শরীরে বইছে। নাৎসিবাদীরাও ফ্যাসিবাদীদের মতো বলপ্রয়োগের মাধ্যমে শাসন ক্ষমতা দখলে বিশ্বাসী ছিল। যেহেতু নাৎসিবাদ বিংশ শতকে সাম্রাজ্যবাদকে উসকে দিয়েছিল সেহেতু নাৎসিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ একে অপরের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।


আরও পড়ুন ঃ

Post a Comment

Previous Post Next Post