নেপোলিয়নের পর্তুগাল অভিযান -
ইউরোপের দেশগুলিতে ব্রিটিশ পণ্য দ্রব্য বিক্রি বন্ধের জন্য ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা জারি করেন। যার উদ্দেশ্য ছিল ইংল্যান্ডকে অর্থনৈতিক দিক থেকে পঙ্গু করে দেওয়া। এই উদ্দেশ্য নেপোলিয়ন বিভিন্ন ঘোষণা জারি করেছিলেন এবং বিভিন্ন কারণে পর্তুগাল অভিযান করেছিলেন। নিন্মে নেপোলিয়নের পর্তুগাল অভিযান সম্পর্কে আলোচনা করা হল -
ইংল্যান্ড ও পর্তুগালের মিত্রতা ঃ পর্তুগাল ছিল ইংল্যান্ডের মিত্র দেশ। নেপোলিয়ন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা জারি করলে পর্তুগাল তা মানতে অস্বীকার করে। কারণ পর্তুগাল ও ইংল্যান্ডের মধ্যে দীর্ঘদিন বাণিজ্য সম্পর্ক ছিল এবং পর্তুগাল ছিল ব্রিটিশ বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।
বার্লিন ডিক্রি ঃ পর্তুগালকে ইংল্যান্ডের সাথে সমস্ত রকম বাণিজ্যিক সম্পর্কে ছিন্ন করে পর্তুগালে থাকে সমস্ত ব্রিটিশ বাণিজ্য সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়ে ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে বার্লিন ডিক্রি জারি করেন। কিন্তু পর্তুগাল নেপোলিয়নের এই নির্দেশ মানতে অস্বীকার করে।
ফঁতেনব্লু-এর সন্ধি ঃ ১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ন স্পেনের সঙ্গে ফঁতেনব্লু-র সন্ধি স্বাক্ষর করে। এই সন্ধির দ্বারা ঠিক হয় যে, ফ্রান্স ও স্পেনের যৌথ বাহিনী পর্তুগাল আক্রমণ করে দখল করে নেবে। পর্তুগালের উপনিবেশগুলিকে ফ্রান্স ও স্পেন নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেবে।
পর্তুগাল দখল ঃ অবশেষে ফঁতেনব্লু-র সন্ধি অনুযায়ী ১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্স ও স্পেনের যৌথবাহিনী সেনাপতি মার্শাল জুনো-এর নেতৃত্বে স্পেনের ওপর দিয়ে পর্তুগাল আক্রমণ করে। এই বাহিনী খুব সহজেই পর্তুগাল দখল করে নেয়, ফলে পর্তুগালের ওপর নেপোলিয়নের মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা চালু হয়।
মূল্যায়ন ঃ নেপোলিয়ন স্পেনের অনুমতি না নিয়েই স্পেনের ওপর দিয়ে সামরিক অভিযান চালালে স্পেনবাসী নেপোলিয়ন ওপর ক্ষুব্ধ হয় ওঠে। ফলে নেপোলিয়ন স্পেনও দখল করে নেয়। এইভাবে তিনি উপদ্বীপের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। যা দীর্ঘকাল যাবৎ চলেছিল। এর ফলে নেপোলিয়ন আর্থিক দিক থেকে যথেষ্ট দুর্বল হয়ে পড়েছিল, যা তাঁর পতনকে ত্বরান্বিত করেছিল।
আরও পড়ুন ঃ