নেপোলিয়নের নেতৃত্বে কনসুলেট শাসন সম্পর্কে আলোচনা করো

নেপোলিয়নের নেতৃত্বে কনসুলেটের শাসন -

অপদার্থ ডাইরেক্টরি শাসনের অবসান ঘটিয়ে নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দের সময়কাল পর্যন্ত ফ্রান্সে একটি নতুন শাসনব্যবস্থা প্রচলন করেছিলেন। এই শাসনব্যবস্থাকে 'কনসুলেট' শাসনব্যবস্থা বলা হয়। নিন্মে নেপোলিয়নের কনসুলেটের শাসন সম্পর্কে আলোচনা করা হল -

কনসাল নিয়োগ ঃ ফ্রান্সের সংবিধান বিশারদ আবে সিয়েস 'কনসুলেটের সংবিধান' রচনা করেছিলেন। এই সংবিধান অনুসারে -

     (i) তিনজন কনসাল নিয়ে একটি শাসন পরিষদ গঠন করা হয়। ফ্রান্সের শাসনভার এই কনসালদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

     (ii) নেপোলিয়ন ছিলেন দেশের প্রথম কনসাল। তিনি দেশের চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী হন এবং আইন প্রণয়ন, মন্ত্রী, রাষ্ট্রদূত, সামরিক ও অসামরিক কর্মচারী নিয়োগ, যুদ্ধ ঘোষণা, শান্তি প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি বিষয়ের ক্ষমতা নেপোলিয়নের হাতে বর্তায়। 

     (iii) অপর দুজন কনসাল ছিলেন আবে সিয়েস ও রজার ডুকোস। এঁরা নামমাত্র কনসাল ছিলেন। এঁরা নেপোলিয়ন তথা প্রথম কনসালের সহকারী তথা আজ্ঞাবাহী ছিলেন। এদের হাতে কোন ক্ষমতা ছিল না।

আইনসভা গঠন ঃ কনসুলেটের শাসনকালে ফরাসি আইনসভাকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলি হল - 

     (i) কাউন্সিল অব স্টেটস ঃ কাউন্সিল অব স্টেটস-এ আইনসভার আইনের প্রস্তাব উত্থাপন করা হত।

     (ii) ট্রাইবুনেট ঃ কাউন্সিল অব স্টেটস-এ উত্থাপিত আইনের প্রস্তাবগুলিকে এইসভায় আলোচনা করা হত।

     (iii) ব্যবস্থাপক সভা ঃ আইনের প্রস্তাবটি ভোটের মাধ্যমে পাশ করত ব্যবস্থাপক সভা।

     (iv) সিনেট ঃ পূর্বোক্ত সভার পাশ হওয়া আইনটির যৌক্তিকতা বিচার করে তা গ্রহণ বা বর্জন করত সিনেট।

একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ঃ কনসুলেটের তৈরি সংবিধান অনুসারে নেপোলিয়ন ১০ বছর ফ্রান্সের কনসাল হিসাবে নিযুক্ত হন। ১৮০২ খ্রিস্টাব্দে সংবিধান সংশোধন করে নেপোলিয়ন আজীবন কনসাল পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন। এভাবে ধীরে ধীরে ফ্রান্সে গণতন্ত্র ধ্বংস হয় এবং পূর্বের ন্যায় আবার একনায়কতন্ত্র ফিরে আসে।

আরও পড়ুন ঃ

Post a Comment

Previous Post Next Post