ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান বৈশিষ্ট্য -
লাইপজিগের যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পরে ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়নকে এলবা দ্বীপে নির্বাসন করা হয়। এরপর বিজয়ী শক্তিবর্গ ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দের ১ নভেম্বর অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনাতে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করে। এটি ভিয়েনা সম্মেলন নামে পরিচিত। ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি হল -
উদ্দেশ্য ঃ এই সম্মেলনের উদ্দেশ্যগুলি ছিল -
(i) নেপোলিয়নের কারণে ভেঙে যাওয়া ইউরোপীয় রাজ্যগুলি পুনর্গঠন করা।
(ii) সাম্রাজ্য লোভী নেপোলিয়ন ইউরোপের বিভিন্ন ভূখণ্ড দখল করে যেভাবে ফরাসি সাম্রাজ্যের বিস্তার ঘটিয়েছিল তার ফলে বিভিন্ন দেশের সীমানার পরিবর্তন ঘটেছিল। ভিয়েনা সম্মেলনের উদ্দেশ্য ছিল এই দেশগুলির সীমানার পুনর্বিন্যাস করা।
(iii) নেপোলিয়নের সাম্রাজ্যবাদী নীতির ফলে যেসমস্ত সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল তার সমাধান করা।
সম্মেলনে ছেদ ঃ ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দে ভিয়েনা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, কিন্তু এর পরের বছর অর্থাৎ ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দের ১ মার্চ নেপোলিয়ন নির্বাসন ত্যাগ করে ফ্রান্সের প্রত্যাবর্তন করে। এর ফলে বিজয়ী শক্তিবর্গ ভিয়েনা সম্মেলনের নীতিগুলি স্তগিত রেখে ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দের ১৮ জুন নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এটি ওয়াটারলু যুদ্ধ নামে পরিচিত। এই যুদ্ধে নেপোলিয়ন চূড়ান্ত ভাবে পরাজিত হয় এবং তাঁকে সেন্ট হেলেনা দ্বীপে নির্বাসন করা হয়। এরপর পুনরায় ভিয়েনা সম্মেলনের কাজ শুরু হয়।
বিশ্বের প্রথম বৃহৎ আন্তর্জাতিক সম্মেলন ঃ ভিয়েনা সম্মেলন ছিল বিশ্বের প্রথম বৃহৎ আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এই সম্মেলনে রোমের পোপ, তুরস্কের সুলতান-সহ ইউরোপের অধিকাংশ দেশের রাষ্ট্রপ্রধান অংশগ্রহণ করেছিলেন।
চারটি দেশের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা ঃ ভিয়েনা সম্মেলনে ইউরোপের অধিকাংশ রাষ্ট্রপ্রধানগণ উপস্থিত থাকলেও অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া, রাশিয়া ও ইংল্যান্ড -এই চারটি দেশ তাদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করেছিল। এই চারটি দেশকে একত্রে 'চার প্রধান' বা 'Big Four' বলা হয়।
মূল্যায়ন ঃ চারটি প্রধান দেশের নির্দেশে ভিয়েনা সম্মেলনের মূল বিষয়গুলি সম্পাদিত হয়েছিল। এই সম্মেলনের মধ্যমণি ছিলেন অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর মেটারনিক। তিনি এই সম্মেলনের মাধ্যমে ইউরোপে পুনরায় স্বৈরাচারী রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন ঃ