শক্তিসাম্য নীতি -
১৮১৫ খ্রিস্টাব্দের ভিয়েনা সম্মেলনে গৃহীত তিনটি মূল নীতির মধ্যে অন্যতম ছিল 'শক্তিসাম্য নীতি' (Principle of Balance of Power). নিন্মে শক্তিসাম্য নীতির বিভিন্ন পদক্ষেপগুলি আলোচনা করা হল -
শক্তিসাম্য নীতির অর্থ ঃ ভবিষ্যতে ফ্রান্স যাতে নিজের শক্তি বৃদ্ধি করে পুনরায় ইউরোপের শান্তি বিঘ্নিত করতে না পারে সেই উদ্দেশ্যে ভিয়েনা সম্মেলনে শক্তিসাম্য নীতি গৃহীত হয়েছিল। এই নীতির মাধ্যমে মিত্রশক্তি ভুক্ত দেশগুলির মধ্যে শক্তির ভারসাম্য রক্ষা করার চেষ্টা করা হয়। এছাড়া এই নীতির অন্য একটি উদ্দেশ্য ছিল ফ্রান্স ব্যতীত যাতে অন্য কোন ইউরোপীয় শক্তি একে অন্যের চেয়ে বেশি শক্তিশালী না হতে পারে।
গৃহীত পদক্ষেপ ঃ শক্তিসাম্য নীতির পদক্ষেপ গুলি হল -
(A) ফ্রান্সের শক্তি হ্রাস করা ঃ
(i)১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে ফ্রান্সের রাজনৈতিক সীমানাকে পুনারায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
(ii) ক্ষতিপূরণ হিসাবে ফ্রান্সের অপর ৭০ কোটি ফ্রাঙ্ক-এর বোঝা চাপানো হয়।
(iii) ফ্রান্সের সেনাবাহিনী ভেঙে দিয়ে ফ্রান্সকে সামরিক দিক থেকে দুর্বল করে দেওয়া হয়।
(iv) ফ্রান্সের পাঁচ বছরের জন্য মিত্রপক্ষের সেনাদল মোতায়েন করা হয় এবং এই সেনাদলের ব্যয়ভার ফ্রান্সের অপর চাপিয়ে দেওয়া হয়।
(B) বেষ্টনী নীতি ঃ বেষ্টনী নীতির মাধ্যমে -
(i) উত্তর-পূর্বে লুক্সেমবার্গ ও বেলজিয়ামকে হল্যান্ডের সাথে যুক্ত করা হয়।
(ii) জার্মানির রাইন অঞ্চলকে প্রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা হয়।
(iii) দক্ষিণ-পূর্বে ফ্রান্সের তিনটি ক্যান্টন বা জেলাকে সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।
(iv) দক্ষিণে স্যাভয় ও জেনোয়াকে পিডমেন্টের সাথে যুক্ত করা হয়।
মূল্যায়ন ঃ শক্তিসাম্য নীতির দ্বারা ফ্রান্সকে সামরিক দিক থেকে দুর্বল করার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল তা মোটেই সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল না। এর ফলে ফ্রান্স ভবিষ্যতে প্রতিশোধ গ্রহণের উদ্যোগ নেয়।
আরও পড়ুন ঃ