জুলাই অর্ডিন্যান্স বলতে কি বোঝো

জুলাই অর্ডিন্যান্স -

ফরাসি সম্রাট দশম চার্লসের প্রধানমন্ত্র পলিগন্যাক বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়াশীল পদক্ষেপ গ্রহণ করলে ফ্রান্সে উদারপন্থীদের নেতৃত্বাধীন নবগঠিত আইনসভা পলিগন্যাকের পদত্যাগ দাবি করে। এরপর পলিগন্যাকের পরামর্শক্রমে সম্রাট দশম চার্লস আইনসভা ভেঙে দেন। এরপর পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সরকারবিরোধীরাই জয় লাভ করে। এই পরিস্থিতিতে পলিগন্যাকের প্রভাবে দশম চার্লস ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দের ২৫ জুলাই 'অর্ডিন্যান্স অব সেন্ট ক্লড' বা 'জুলাই অর্ডিন্যান্স' জারি করেন।

অর্ডিন্যান্সের বিধি ঃ জুলাই অর্ডিন্যান্স জারি করে সরকার বিভিন্ন জনবিরোধী কার্যকলাপ করেছিল। যেমন - 

     (i) এই অর্ডিন্যান্সের দ্বারা নতুন আইনসভা ভেঙে দেওয়া হয়। 

     (ii) সংবাদপত্রের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়।

     (iii) ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দের অষ্টাদশ লুই- এর আমলের সনদ আইন বাতিল করা হয়।

     (iv) বুর্জোয়াদের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে শুধুমাত্র অভিজাতদের ভোটাধিকার বজায় রাখা হয়।

জুলাই বিপ্লব ঃ ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দের ২৫ জুলাই প্রতিক্রিয়াশীল 'জুলাই অর্ডিন্যান্স' জারি করা হলে তার পরেরদিন থেকেই ফ্রান্সে তীব্র বিপ্লব শুরু হয়েছিল। থিয়ার্স, লাফায়েত, গিজো, তালিরঁ প্রমুখের নেতৃত্বে আন্দোলন দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এই আন্দোলনে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ শামিল হয়েছিল।

রাজার পদত্যাগ ঃ আন্দোলনের চাপে ফরাসি সম্রাট দশম চার্লস তাঁর নাবালক পৌত্রের অনুকূলে ফ্রান্সের সিংহাসন ত্যাগ করেছিলেন। বিপ্লবী নেতারা অর্লিয়েন্সঁ বংশের লুই ফিলিপকে ফ্রান্সের রাজা হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন। এইভাবে জুলাই বিপ্লব সফল হয়েছিল।

মূল্যায়ন ঃ জুলাই অর্ডিন্যান্স জারির বিরুদ্ধে থিয়ার্স, লাফায়েত, গিজো, তালিরঁ প্রমুখের নেতৃত্বে মাত্র তিনটি 'গৌরবময় দিন'-এর (২৭ - ২৯ জুলাই) রক্তপাতহীন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে জুলাই বিপ্লব সম্পন্ন হয়েছিল।


আরও পড়ুন ঃ

Post a Comment

Previous Post Next Post