প্রিয় ছাত্রছাত্রী, আজ আমি তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করব নবম শ্রেণির ইতিহাস (Class nine History) চতুর্থ অধ্যায় (4th chapter) শিল্পবিপ্লব, উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ থেকে একটি 4 মার্কের প্রশ্ন - "আফ্রিকায় উপনিবেশ বিস্তারের কারণ কি ছিল"।
আফ্রিকায় উপনিবেশ বিস্তারের কারণ -
ঊনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভাগ থেকে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলি 'অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশ' আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে উপনিবেশ প্রতিষ্ঠার জন্য উদ্যোগী হয়ে ওঠে। আফ্রিকা মহাদেশে ইউরোপীয় শক্তিগুলির উপনিবেশ বিস্তারের কারণ ছিল -
প্রাকৃতিক সম্পদ ঃ আফ্রিকা মহাদেশ ছিল বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ। যেমন - কৃষিজ কাঁচামাল, খনিজ সম্পদ প্রভৃতি। আফ্রিকার এই প্রাকৃতিক সম্পদ ইউরোপীয় শক্তিশালী রাষ্ট্রের পক্ষে খুবই প্রয়োজনীয় ছিল। এই কাঁচামাল সংগ্রহের উদ্দেশ্যেই ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলি আফ্রিকার বিভিন্ন স্থানে উপনিবেশ স্থাপন করতে শুরু করে।
ধর্মপ্রচার ঃ ইউরোপের শ্বেতাঙ্গ জাতি আফ্রিকার পিছিয়ে পড়া কৃষ্ণাঙ্গ জাতিগুলিকে নিজেদের 'সত্য ধর্ম'-এ অর্থাৎ খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত করার উদ্দেশ্যে আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে নিজেদের উপনিবেশ গড়ে তুলতে থাকে। ইউরোপীয়রা আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে খ্রিস্টান মিশনারিদের পাঠিয়ে সেখানে নিজদের ধর্ম প্রচারের উদ্যোগ নেয়।
মনরো নীতির প্রভাব ঃ ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন রাষ্ট্রপতি জেমস মনরো তাঁর 'মনরো নীতি' ঘোষণা করেন। যার উদ্দেশ্য ছিল দক্ষিণ আমেরিকায় বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করা। আমেরিকায় ব্যর্থ হয়ে ইউরোপীয় শক্তিগুলি আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের উপনিবেশ সম্প্রসারণ নীতি চালু করে।
গৌরবের আকাঙ্ক্ষা ঃ ইউরোপীয় শক্তিশালী ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রগুলির কাছে উপনিবেশ স্থাপন ছিল মর্যাদা ও গৌরবের বিষয়। এই উদ্দেশ্যে ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলি আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের উপনিবেশ স্থাপন করে নিজ নিজ আধিপত্য স্থাপন করে।
মূল্যায়ন ঃ শিল্প বিপ্লবের ফলে উদ্বৃত্ত পণ্য বিক্রির বাজার দখল, অতিরিক্ত জনসংখ্যার জন বাসস্থানের জায়গা, কর্মসংস্থান ইত্যাদি লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যে ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তাদের উপনিবেশ স্থাপনের জন্য উদ্যত হয়ে ওঠে। বৃহৎ আয়তনের আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপনের মধ্যে দিয়ে তাদের বাসনা পূর্ণ হয়।