ঔপনিবেশিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও উগ্র জাতীয়তাবাদের মধ্যে সম্পর্ক কি

প্রিয় ছাত্রছাত্রী, আজ আমি তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করব নবম শ্রেণির ইতিহাস (Class nine History) চতুর্থ অধ্যায় (4th chapter) শিল্পবিপ্লব, উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ থেকে একটি 4 মার্কের প্রশ্ন - "ঔপনিবেশিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও উগ্র জাতীয়তাবাদের মধ্যে সম্পর্ক কি"

ঔপনিবেশিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও উগ্র জাতীয়তাবাদের মধ্যে সম্পর্ক -

শিল্প বিপ্লবের পর পৃথিবীর রাজনীতি, অর্থনীতি যেভাবে পরিবর্তন হয়েছে তার ফলে একদিকে উপনিবেশ দখল বা সাম্রাজ্যবাদ এবং অপরদিকে উগ্র জাতীয়তাবাদ অত্যন্ত সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। ঊনবিংশ এবং বিংশ শতকে উপনিবেশবাদ এবং সাম্রাজ্যবাদের প্রসারের ও অন্যতম কারণ ছিল উগ্র জাতীয়তাবাদ। নিন্মে ঔপনিবেশিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং উগ্র জাতীয়তাবাদের মধ্যে সম্পর্ক আলোচনা করা হল -


উগ্র জাতীয়তাবাদ ঃ ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ইউরোপ মহাদেশের শিল্পোন্নত জাতিগুলি নিজ নিজ জাতিকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করার জন্য এবং অন্য জাতিকে নিকৃষ্ট হিসাবে তুলে ধরার জন্য নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শামিল হয়। নিজ নিজ জাতির শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার ক্ষেত্রে ইউরোপের শক্তিশালী দেশগুলির এই অতি সক্রিয়তাকে উগ্র জাতীয়তাবাদ বলা হয়। 


সভ্যতার উন্নয়ন (শ্বেতাঙ্গ জাতির দায়বদ্ধতা) ঃ উগ্র জাতীয়তাবাদী শ্বেতাঙ্গ জাতিগুলি প্রচার করে যে, এশিয়া ও আফ্রিকার অনুন্নত জাতিগুলির প্রতি উন্নত শ্বেতাঙ্গ জাতির কিছু দায়বদ্ধতা রয়েছে। অনুন্নত জাতিগুলিকে উন্নত ও সভ্য করে তোলার অজুহাতে ইউরোপীয় শক্তিশালী দেশগুলি এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে নিজেদের উপনিবেশ স্থাপন করে।

ধর্মপ্রচার ঃ এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন অনুন্নত অঞ্চল গুলিতে ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে ইউরোপের খ্রিস্টান জাতিগুলি খ্রিস্টান মিশনারিদের পাঠাতে থাকে। মিশনারিদের অনুসরণ করে ইউরোপের পুঁজিপতিরা উপনিবেশগুলিতে তাদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করে।

মানবকল্যাণ ঃ ইউরোপের শিল্পোন্নত শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলি প্রচার করে যে, এশিয়া ও আফ্রিকার অনুন্নত জাতিগুলিকে উন্নত করার জন্য সেখানে ইউরোপীয়দের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা হওয়া প্রয়োজন। এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ইউরোপের বিভিন্ন খ্রিস্টান মিশনারিদের এই অঞ্চলে প্রবেশ করানো হয়, তাদের পিছনে আড়ালে থেকে পুঁজিপতিরা সেখানে ঔপনিবেশিক শাসন শক্তিশালী করে তোলে।

মূল্যায়ন ঃ উগ্র জাতীয়তাবাদী শক্তিগুলি নিজ জাতির শ্রেষ্ঠত্ব প্রমানের জন্য একে অপরের সাথে ঔপনিবেশিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হয়। এর ফল স্বরূপ ইউরোপবাসী ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সম্মুখীন হয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post