প্রিয় ছাত্রছাত্রী, আজ আমি তোমাদের সাথে শেয়ার করব "শিল্প বিপ্লবের অর্থনৈতিক ফলাফল আলোচনা করো" / "শিল্প বিপ্লবের অর্থনৈতিক প্রভাব" -এই প্রশ্নটি।
শিল্প বিপ্লবের অর্থনৈতিক ফলাফল / প্রভাব -
ইউরোপের ইংল্যান্ডের পর ধীরে ধীরে অন্যান্য দেশগুলিতে শিল্প বিপ্লবের ছোঁয়া লাগে। ইউরোপে শিল্প বিপ্লবের ফলে সেখানকার কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি শিল্পভিত্তিক অর্থনীতিতে পরিণত হয়। ইউরোপ তথা বিশ্বের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে শিল্প বিপ্লবের গভীর ও সুদূরপ্রসারী প্রভাব বা ফলাফল লক্ষ্য করা যায়। যেমন -
বাণিজ্যের প্রসার ঃ শিল্প বিপ্লবের ফলে কলকারখানাগুলিতে স্বল্প সময়ে বিপুল পরিমাণ পণ্য উৎপাদিত হতে থাকে। ফলে নিজের দেশের চাহিদা মেটানোর পর উদ্বৃত্ত পণ্য বিদেশের বাজারে পাঠানো শুরু হয়। ফলে দেশীয় বাণিজ্যের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও বাণিজ্যের প্রসার ঘটে।
ঔপনিবেশিক বিরোধ ঃ শিল্পজাত পণ্য বিক্রির উদ্দেশ্যে ইউরোপীয় দেশগুলি বিদেশের বাজার খুঁজতে শুরু করে। এরফলে প্রতিটি শিল্পোন্নত দেশ একে অপরের সাথে উপনিবেশ দখলের প্রতিযোগিতায় নামে এবং নিজেদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করে।
ফ্যাক্টরি প্রথার সূচনা ঃ শিল্প বিপ্লবের ফলে ইউরোপে 'ফ্যাক্টরি প্রথা'-র উদ্ভব ঘটে। অর্থাৎ কুটির শিল্পের পরিবর্তে বৃহৎ ফ্যাক্টরি বা শিল্পকারখানা গড়ে উঠতে থাকে।
শ্রম বিভাজন ঃ শিল্প বিপ্লবের ফলে পুঁজিপতি বণিক শ্রেণি বাণিজ্য থেকে তাদের মূলধন সরিয়ে নিয়ে শিল্পোৎপাদনের কাজে বিনিয়োগ করতে শুরু করে। এইভাবে বাণিজ্যিক মূলধন 'শিল্প মূলধন-এ পরিণত হয়।
অর্থনৈতিক শোষণ ঃ শিল্প বিপ্লবের ফলে মালিক শ্রেণি শ্রমিকদের দৈনিক ১৭ থেকে ১৮ ঘণ্টা কাজে লাগাত। অথচ তাদের মজুরি দিত খুবই সামান্য। যা দিয়ে শ্রমিকদের ঠিক মতো জীবনযাপন সম্ভব ছিল না। এইভাবে শ্রমিক শ্রেণির ওপর মালিক শ্রেণির অত্যাচার ও শোষণ চলতে থাকে।
মূল্যায়ন ঃ শিল্প বিপ্লবের ফলে কলকারখানার মালিকরা শ্রমিকদের ওপর অর্থনৈতিক শোষণ চালিয়ে নিজেরা অর্থের পাহাড় সৃষ্টি করে। ধীরে ধীরে শ্রমিকরা সমাজতন্ত্রের গুরুত্ব উপলব্ধি করে এবং তারা সংঘবদ্ধ হতে শুরু করে।
আরও পড়ুন ঃ