শিল্প বিপ্লবের পরবর্তীকালে উপনিবেশের প্রসারে রেলপথ প্রতিষ্ঠার পরিচয় -
অষ্টাদশ শতকে ইউরোপে শিল্প বিপব ঘটার পরবর্তীকালে ইউরোপের শিল্পোন্নত দেশগুলি এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলিতে উপনিবেশ বিস্তারে মনোনিবেশ করে। উপনিবেশের সম্প্রসারণে রেলপথের প্রতিষ্ঠা ও প্রসারের বিশেষ ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়। নিন্মে শিল্প বিপ্লবের পরবর্তীকালে উপনিবেশের প্রসারে রেলপথ প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে আলোচনা করা হল -
ইংল্যান্ডে রেলপথের বিস্তার ঃ বিশ্বের মধ্যে সর্বপ্রথম রেলপথের প্রতিষ্ঠা হয় ইংল্যান্ডে। প্রথমে ঘোড়ায় টানা রেল চালু হলেও ১৮২৫ খ্রিস্টাব্দে জর্জ স্টিফেনসন বাষ্পীয় রেল ইঞ্জিন আবিষ্কার করলে রেলপথের দ্রুত প্রসার ঘটতে থাকে। ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডের রেলপথের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ২৫ হাজার মাইল।
ফ্রান্সে রেলপথের বিস্তার ঃ ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে রেলপথ বিস্তারের কাজ শুরু হয়। ফ্রান্সের প্রথম রেল সংযোগ গড়ে ওঠে তুলোঁ, বর্দো, আলসাস প্রভৃতি স্থানে। ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের রেলপথের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ২৩ হাজার মাইল।
জার্মানিতে রেলপথের প্রসার ঃ জার্মানিতে সর্বপ্রথম রেলপথ প্রতিষ্ঠা হয় ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে লাইপজিগ থেকে ড্রেসডেন পর্যন্ত। ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে জার্মানিতে রেলপথের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ৩৪ হাজার মাইল।
রাশিয়ায় রেলপথের প্রসার ঃ রাশিয়ার জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডারের আমলে রাশিয়ায় রেলপথের যথেষ্ট সম্প্রসারণ লক্ষ্য করা যায়। ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ রাশিয়ায় রেলপথের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ২৩ হাজার মাইল।
উপনিবেশে রেলপথ ঃ ইংল্যান্ডের উপনিবেশ তথা ভারত, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ায় ইংল্যান্ডের প্রচেষ্টায় রেলপথের বিস্তার ঘটে। উপনিবেশ গুলিতে রেলপথের প্রসার ঘটিয়ে ইংল্যান্ড প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাজার গুলিতে শিল্প সামগ্রী পৌঁছে দেয় এবং সেই সব অঞ্চল থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে নিজের দেশের কারখানাগুলিতে উৎপাদন অব্যাহত রাখে।
মূল্যায়ন ঃ ইউরোপের শক্তিশালী দেশগুলি নিজেদের প্রয়োজনে তাদের উপনিবেশগুলিতে রেলপথের প্রসার ঘটায়। পরবর্তীকালে সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের বিরুদ্ধে উপনিবেশের বাসিন্দাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার ক্ষেত্রে রেলপথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল।