জার্মানিতে মেটারনিক ব্যবস্থার প্রয়োগ -
অস্ট্রিয়া-সহ ইউরোপের অন্যান্য দেশেও মেটারনিক তাঁর নীতি প্রয়োগ করে রক্ষণশীলতা বজায় রাখতে চেয়েছিল। ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দের ভিয়েনা সম্মেলনে ৩৯ টি জার্মান রাজ্য নিয়ে একটি 'বুন্ড' বা রাজ্য-সমবায় গঠন করা হয়েছিল। যার সভাপতি হয়েছিল অস্ট্রিয়া তথা মেটারিক। জার্মানিতে মেটারনিক ব্যবস্থার প্রয়োগ সম্পর্কে আলোচনা করা হল -
কার্লসবাড ডিক্রি জারি ঃ জার্মানিতে মেটারনিক তাঁর নীতি কার্যকর করার জন্য ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে 'কার্লসবাড ডিক্রি' নামক একটি কুখ্যাত হুকুমনামা জারি করেছিলেন। এটির সদর দপ্তর হয়েছিল জার্মানির মেইনজ শহরে।
নিষিদ্ধকরণ ঃ কার্লসবাড ডিক্রি জারি করে মেটারনিক জার্মানির রাজনৈতিক দল এবং ছাত্র সংগঠনগুলিকে দমন করেন। পাশাপাশি তিনি বারখেনশাফট-এর মতো উদারপন্থী এবং দেশপ্রেমিক ছাত্র সংগঠনগুলিকেও নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করেছিলেন।
উদারপন্থা প্রতিরোধ ঃ মেটারনিক জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে কঠোর সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচি থেকে বিজ্ঞানের পঠনপাঠন বাদ দেওয়া হয়।
অধ্যাপক ও ছাত্রদের নিগ্রহ ঃ উদারপন্থী অধ্যাপকদের কাজ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। ছাত্র এবং অধ্যাপকদের গতিবিধির ওপর নজরদারি করার জন্য গোয়েন্দা বাহিনী নিয়োগ করা হয়। স্কুল-কলেজের ছাত্ররা যাতে কোনভাবেই জাতীয়তাবাদের দ্বারা প্রভাবিত না হয় তার জন্য মেটারনিক সব রকম চেষ্টা করেছিলেন।
স্বাধীনতা হরণ ঃ মেটারনিক জার্মানির সাধারণ মানুষের বাকস্বাধীনতার ওপর প্রতিরোধ আরোপ করেছিলেন এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিলেন। এছাড়া মেটারনিক জার্মানির কোন রাজ্যে যেন উদারপন্থী সংবিধান না চালু হয় সেদিকেও বিশেষ নজর দিয়েছিলেন।
মূল্যায়ন ঃ জার্মানিতে কার্লসবাড ডিক্রি জারি করার ফলে মেটারনিকের প্রাথমিক সাফল্যের কারণে ইউরোপের অন্যান্য দেশেও তাঁর স্বৈরতান্ত্রিক পদক্ষেপগুলি চালু করতে সহজ হয়েছিল।