জার্মানিতে শিল্প বিপ্লব / শিল্পায়নের অগ্রগতি -
অষ্টাদশ শতকের দ্বিতীয় ভাগে ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লব শুরু হয়েছিল। ধীরে ধীরে তা ইউরোপের অন্যান্য দেশেও পৌঁছে যায়। ফ্রান্সে শিল্প বিপ্লব ঘটার পর ঊনবিংশ শতকের প্রথম দিকে জার্মানিতে শিল্পায়ন শুরু হয়। জার্মানিতে শিল্পায়নের প্রসারে জার্মানির রাজ্যগুলি বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল। এবিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছিল প্রাশিয়া। নিন্মে জার্মানিতে শিল্প বিপ্লব বা শিল্পায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করা হল -
শ্রমিকের জোগান ঃ ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে প্রাশিয়ায় ভূমিদাস প্রথার অবসান ঘটে। এরপর মুক্ত ভূমিদাসরা বিভিন্ন শিল্প কারখানায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহের জন্য শহরের কলকারখানাগুলিতে চলে আসে।
জোলভেরাইন ঃ জার্মান রাজ্যগুলির উদ্যোগে ১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে 'জোলভেরাইন' নামক শুল্কসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। ফলে জার্মানির বিভিন্ন রাজ্যে শুল্ক প্রদানের সমস্যা দূর হয় ও জার্মানিতে শিল্প বিপ্লবে গতি আসে।
রেলপথের বিস্তার ঃ ১৭৩৫ খ্রিস্টাব্দে জার্মানিতে রেলপথের প্রতিষ্ঠা হয়। রেলপথ প্রতিষ্ঠার কয়েক দশকের মধ্যেই তার যথেষ্ট বিস্তার ঘটে। এরফলে জার্মানিতে পণ্য চলাচলের সুবিধা হয়।
আলসাস-লোরেইন লাভ ঃ ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে জার্মানি ফ্রান্সের কাছ থেকে কয়লা ও লৌহখনি সমৃদ্ধ অঞ্চল আলসাস ও লোরেইন লাভ করে। ফলে জার্মানির শিল্প কারখানাগুলিতে কয়লা ও লোহার জোগান বৃদ্ধি পায়।
অর্থের জোগান ঃ জার্মানির ঐক্যবদ্ধের সময় ফ্রান্সের কাছ থেকে প্রচুর ক্ষতিপূরণ লাভ করে। জার্মানির চ্যান্সেলর বিসমার্ক জার্মান ব্যাংক ব্যবস্থার পুনর্গঠন করেছিলেন। এরফলে শিল্প কারখানাগুলিতে অর্থের জোগান বৃদ্ধি পায়।
বিভিন্ন শিল্প ঃ ঐক্যবদ্ধ জার্মানিতে ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দের পর প্রচুর শিল্প কারখানা গড়ে ওঠে। এরফলে সেখানে কয়লা, অস্ত্র নির্মাণ, লৌহ-ইস্পাত, জাহাজ, যন্ত্রপাতি নির্মাণ ইত্যাদি শিল্পের প্রসার ঘটে।
মূল্যায়ন ঃ ঐক্যবদ্ধ জার্মানিতে বিসমার্কের হাত ধরেই শিল্পের অগ্রগতি শুরু হয়। বিসমার্কের ব্যাংক ব্যবস্থার পুনর্গঠন, শিল্প সংরক্ষণ নীতি, বিদেশি পণ্যে অধিক শুল্ক আরোপ ইত্যাদি কার্যকলাপ জার্মানিকে ক্রমেই ইউরোপের শিল্পপ্রধান দেশে রূপান্তরিত করে।
আরও পড়ুন ঃ