ভারত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রত্ন / 'ভারতকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রত্ন' বলার কারণ -
ইংল্যান্ড তথা ব্রিটিশদের সমস্ত উপনিবেশগুলির মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার উপদ্বীপ ভারত ছিল সর্বশ্রেষ্ঠ ও অন্যতম প্রধান উপনিবেশ। অষ্টাদশ শতকের শেষভাগ থেকে পরবর্তী দেড়শো বছর পর্যন্ত ভারতের অর্থ সম্পদকে ব্রিটিশ প্রশাসন নিজেদের সাম্রাজ্যের স্বার্থের কাজে লাগাতে সচেষ্ট হয়। বিভিন্ন কারণের ওপর ভিত্তি করে ভারতকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রত্ন বলা হয়ে থাকে। যেমন -
মহাবিদ্রোহের ক্ষতিপূরণ ঃ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতে সিপাহী বিদ্রোহ বা মহাবিদ্রোহ সংঘটিত হলে ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের যাবতীয় খরচ তথা ক্ষতিপূরণ ভারত থেকেই আদায় করা হয়। এই বিদ্রোহে ব্রিটিশরা ভারতীয়দের দমন করার জন্য ভারতের অর্থ সম্পদকেই ব্যবহার করেছিল।
পণ্যসামগ্রী বিক্রয়ের বাজার ঃ ব্রিটেনে উৎপাদিত শিল্পজাত পণ্যসামগ্রী বিক্রির জন্য ভারতের বাজারকে উন্মুক্ত করা হয়। এপ্রসঙ্গে প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল, ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের ব্রিটেনের ল্যাঙ্কাশায়ারে উৎপাদিত সুতি কাপড়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ বিক্রি করা হত ভারতে।
শিল্প-বাণিজ্য ঃ ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে ভারতে প্রথম রেলপথ শুরু হয়। ভারতের রেলগাড়ি ও রেলপথ নির্মাণের জন্য ব্যবহৃত ইস্পাতের ১৭% আনা হত ব্রিটেন থেকে। এছাড়াও ভারতীয় শিল্প বাণিজ্যের অভিমুখ ব্রিটেনের স্বার্থে পরিচালিত হত। এরফলে ভারত হয়ে উঠেছিল ব্রিটিশ বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও লাভজনক উপনিবেশ।
মূল্যায়ন ঃ ভারতের আয়তন বৃহৎ হওয়ার জন্য এখানকার বাজারের সংখ্যা এবং কাঁচামালের সুবিধা ব্রিটিশদের বাড়তি সুবিধা জুগিয়েছিল। ব্রিটেনের অর্থনৈতিক শক্তি সুদৃঢ় করার পিছনে ভারতের ভূমিকা ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভারত থেকে লাভ করা মুনাফা ব্রিটেন বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তের উপনিবেশ গুলিতে বিনিয়োগ করে সেখানকার রাজনৈতিক কর্তৃত্বও নিজেদের অধীনে নিয়ে আসে।
আরও পড়ুন ঃ