শিল্প বিপ্লব কিভাবে উপনিবেশের জন্ম দিয়েছিল -
অষ্টাদশ শতকে ইউরোপে শিল্প বিপ্লব শুরু হয় এবং ঊনবিংশ শতকের মধ্যে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে শিল্পায়নের ব্যাপক প্রসার লক্ষ্য করা যায়। শিল্প বিপ্লবের একটি প্রত্যক্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব হল শিল্পোন্নত দেশগুলির দ্বারা বিশ্বের অনুন্নত দেশে রাজনৈতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা এবং উপনিবেশের বিস্তার ঘটানো। শিল্প বিপ্লব কীভাবে উপনিবেশের জন্ম দিয়েছিল তা নিন্মে আলোচনা করা হল -
পণ্য বিক্রি ঃ শিল্প বিপ্লব ঘটার ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই কলকারখানাগুলিতে প্রচুর পণ্য সামগ্রী উৎপাদন হতে শুরু করে। এরফলে নিজের দেশের চাহিদা মেটানোর পর অতিরিক্ত পণ্য বিক্রির জন্য ইউরোপীয় দেশগুলির বিদেশের বাজার দখলের প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
কাঁচামাল সংগ্রহ ঃ শিল্প কারখানাগুলিতে উৎপাদন সচল রাখার জন্য নিয়মিত বিপুল পরিমাণ কাঁচামালের প্রয়োজন হয়। এই অবস্থায় শিল্পোন্নত দেশগুলি কাঁচামাল সংগ্রহের উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক আধিপত্য অর্থাৎ ঔপনিবেশিক শাসন কায়েম করে। উপনিবেশগুলি থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে শিল্পোন্নত দেশগুলি নিজের দেশের কলকারখানা সচল রাখে।
প্রতিদ্বন্দ্বিতা ঃ পণ্য বিক্রির বাজার এবং কাঁচামাল সংগ্রহের উদ্দেশ্যে প্রতিটি শিল্পোন্নত দেশ উপনিবেশ দখল করার লক্ষ্যে নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু করে। উপনিবেশ দখলকে কেন্দ্র করে ইউরোপের শিল্পোন্নত দেশ যেমন, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি, স্পেন, হল্যান্ড, পর্তুগাল ইত্যাদি দেশ প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে।
বিভিন্ন দেশের উপনিবেশ ঃ ইউরোপের শিল্পোন্নত দেশগুলি এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলিতে নিজেদের উপনিবেশ স্থাপন করে। শিল্পোন্নত ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলি এশিয়ার ভারত, ব্রহ্মদেশ, আফগানিস্তান, মালয়, ইন্দোচিন, সিংহল, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, শ্যামদেশ, চীন, পারস্য-সহ আফ্রিকার প্রায় সমগ্র ভূখণ্ডে উপনিবেশ গড়ে তোলে।
মূল্যায়ন ঃ এশিয়া ও আফ্রিকার পিছিয়ে পড়া দেশগুলিতে ইউরোপীয় শক্তিগুলি নিজেদের উপনিবেশ স্থাপন করতে থাকে। ইউরোপীয় দেশগুলি তাদের উপনিবেশ থেকেই কাঁচামাল সংগ্রহ করে এবং উপনিবেশের বাজারেই সুগুলি বিক্রি করে প্রচুর মুনাফা অর্জন করে। এইভাবে শিল্পোন্নত দেশগুলির কাছে তাদের উপনিবেশগুলি এক-একটি রত্ন ভাণ্ডারে পরিণত হয়।
আরও পড়ুন ঃ