শিল্প বিপ্লবের ফলে ইউরোপের দেশগুলোর উপনিবেশের প্রসার ঘটানোর উদ্দেশ্য -
ইউরোপের শিল্প বিপ্লব ঘটার পর ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, স্পেন, পর্তুগাল, বেলজিয়াম, হল্যান্ড প্রভৃতি দেশ উপনিবেশ প্রতিষ্ঠায় ঝাঁপিয়ে পড়ে। উপনিবেশবাদের প্রধান কয়েকটি উদ্দেশ্যগুলি ছিল। যথা -
কাঁচামাল সংগ্রহ ঃ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রচুর কলকারখানা গড়ে উঠলে এই কলকারখানার প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সংগ্রহ করার উদ্দেশ্যে দেশের বাইরে বিভিন্ন অঞ্চলে উপনিবেশ স্থাপন শুরু হয়।
পণ্য বিক্রি ঃ শিল্প বিপ্লবের ফলে শিল্প কারখানা গুলিতে বিপুল পরিমাণ পণ্য উৎপাদিত হতে থাকে। এই বিপুল পরিমাণ পণ্য সামগ্রী দেশের চাহিদা মেটানোর পরও উদ্বৃত্ত থেকে যেত। বিদেশের বাজারে এই উদ্বৃত্ত শিল্পজাত পণ্য বিক্রির উদ্দেশ্যে ইউরোপের দেশগুলি উপনিবেশ বিস্তারে আগ্রহী হয়ে পড়ে।
জনসংখ্যা বৃদ্ধি ঃ অষ্টাদশ-ঊনবিংশ শতক থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই অতিরিক্ত জনসংখ্যার জন্য প্রয়োজনীয় বাসস্থান ও কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে নিজ দেশের বাইরে নতুন অঞ্চলে আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় ইউরোপের শিল্পোন্নত দেশগুলি মত্ত হয়ে পড়ে।
মূলধন বিনিয়োগ ঃ শিল্প বিপ্লবের ফলে এক শ্রেণির মানুষের কাছে অর্থের পাহাড় সৃষ্টি হয়। ফলে তারা সমাজে মালিক শ্রেণি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। পুঁজিপতি মালিক শ্রেণি শিল্পজাত পণ্য বিক্রি করে নিয়মিত যে বিপুল পরিমাণ মুনাফা লাভ করে তা তারা নতুন উপনিবেশগুলিতে নতুন কলকারখানা স্থাপনে বিনিয়োগ করতে থাকে।
শক্তিবৃদ্ধি ঃ ইউরোপের শিল্পোন্নত দেশগুলি ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যের প্রসার ঘটিয়ে নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করতে থাকে। বিশ্ব দরবারে নিজেদের মর্যাদা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ইউরোপের দেশগুলি উপনিবেশ স্থাপনের অসম প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে।
মূল্যায়ন ঃ শিল্প বিপ্লবের ফলে ইউরোপের দেশগুলি নিজেদের দেশের বাইরের অঞ্চলে উপনিবেশ স্থাপন করতে শুরু করে। ধীরে ধীরে এই সব উপনিবেশের রাজনৈতিক অধিকারও ইউরোপীয় দেশগুলির হাতে চলে আসে।