ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লব ঘটাতে বিজ্ঞানিক আবিষ্কার -
অষ্টাদশ শতকের দ্বিতীয় ভাগে ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লব শুরু হয়েছিল। ধীরে ধীরে তা ইংল্যান্ড থেকে ইউরোপের অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে যায়। বিভিন্ন ধরণের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার সর্বপ্রথম ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লব ঘটাতে সাহায্য করেছিল। নিন্মে এই বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার সম্পর্কে আলোচনা করা হল -
বস্ত্রশিল্পে আবিষ্কার ঃ অষ্টাদশ শতকে বস্ত্রশিল্পের উন্নতিতে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার সাহায্য করেছিল। এই আবিষ্কারগুলি হল -
(i) জন কে আবিষ্কৃত ফ্লাইং শাট্ল (উরন্ত মাকু),
(ii) আর্করাইটের ওয়াটার ফ্রেম,
(iii) হারগ্রিভ্সের স্পিনিং জেনি,
(iv) কার্টরাইটের পাওয়ার লুম,
(v) ক্রম্পটন আবিষ্কৃত মিউল প্রভৃতি।
বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কার ঃ ১৭৬৯ খ্রিস্টাব্দে জেম্স ওয়াট বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কার করেছিলেন। যার ফলে শিল্পের প্রয়োজনীয় যন্ত্রগুলি চালানোর জন্য খুবই সহায়ক হয়।
লৌহ শিল্পের প্রযুক্তি ঃ লৌহ শিল্পের উন্নতিতে বিভিন্ন প্রযুক্তি সাহায্য করেছিল। যেমন -
(i) জন স্মিটন আবিষ্কৃত 'ব্লাস্ট ফার্নেস' (লোহা গলানোর চুল্লি),
(ii) আব্রাহাম ডারবি কর্তৃক আবিষ্কৃত লোহা গলাবার পদ্ধতি,
(iii) হেনরি বেসিমির আবিষ্কৃত ইস্পাত তৈরির কৌশল প্রভৃতি ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লব ঘটাতে সাহায্য করেছিল।
নিরাপত্তা বাতি ঃ হামফ্রে ডেভি আবিষ্কার করেছিলেন সেফটি ল্যাম্প বা নিরাপত্তা বাতি। যেটি মাটির নীচ থেকে নিরাপদে কয়লা-সহ বিভিন্ন খনিজ উত্তোলনের ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়ক ছিল।
পরিবহণ ক্ষেত্রে আবিষ্কার ঃ ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লব ঘটানোর জন্য পরিবহণ ক্ষেত্রে বিভিন্ন আবিষ্কার হয়েছিল। যেমন -
(i) টেলফোর্ড ম্যাকাডাম আবিষ্কৃত পিচের রাস্তা,
(ii) ফুলটন আবিষ্কৃত বাষ্পীয় স্টিমার,
(iii) জর্জ স্টিফেনসন কর্তৃক আবিষ্কৃত বাষ্পচালিত রেলইঞ্জিন,
(iv) এছাড়া টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লব ঘটাতে বিশেষ সহযোগিতা করেছিল।
মূল্যায়ন ঃ শিল্প বিপ্লবের ফলে ইংল্যান্ডের যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটে। শিল্প ক্ষেত্রে যন্ত্রের ব্যবহারের ফলে শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধি পায়। এরফলে প্রচুর শিল্পজাত দ্রব্য উদ্বৃত্ত থেকে যায় এবং তা বিক্রির জন্য তারা এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে উপনিবেশ প্রতিষ্ঠার আগ্রহ প্রকাশ করে।