ব্রেস্ট লিটোভস্কের সন্ধি / ব্রেস্ট লিটোভস্ক সন্ধি -
রাশিয়ার বলশেভিক দল প্রথম বিশ্বযুদ্ধে থেকে সরে এসে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী ছিল। ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে এই দল রাশিয়ার রাষ্ট্র-ক্ষমতা দখল করে নেয়। ক্ষমতা দখলের পর রাশিয়ার বলশেভিক সরকার জার্মানির সঙ্গে ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের ৩ মার্চ ব্রেস্ট লিটভস্কের সন্ধি স্বাক্ষর করে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকে সরে দাঁড়ায়। নিন্মে ব্রেস্ট লিটোভস্কের সন্ধি-র শর্তাবলি ও ফলাফল সম্পর্কে আলোচনা করা হল -
শর্তাবলি ঃ ব্রেস্ট লিটভস্কের সন্ধি-তে বলা হয় যে,
(i) রাশিয়া তার বলশেভিক সমাজতন্ত্রের আদর্শ অন্য কোন রাষ্ট্রে প্রচার করবে না।
(ii) রাশিয়া জার্মানিকে ক্ষতিপূরণ দেবে।
(iii) রাশিয়া কার্স, বার্টুম, আর্দাহান প্রভৃতি প্রদেশগুলিকে তুরস্ককে পুনরায় ফিরিয়ে দেবে।
(iv) পোল্যান্ড, কুরল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া প্রভৃতি স্থানের ওপর রাশিয়া তার আধিপত্য পরিত্যাগ করবে।
(v) লিভোনিয়া, এস্তোনিয়া ও ফিনল্যান্ড অঞ্চল রাশিয়া ত্যাগ করবে।
ফলাফল ঃ ব্রেস্ট লিটভস্কের সন্ধির ফলাফলগুলি হল -
(i) জার্মানিকে রাশিয়া বিপুল পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হলে রাশিয়ার অর্থনীতি সংকটের সম্মুখীন হয়।
(ii) রাশিয়ার বিস্তৃত কৃষি ও শিল্প-উৎপাদক অঞ্চলগুলি হাতছাড়া হয়ে যায়।
(iii) যুদ্ধ থেকে সরে এসে রাশিয়া তার অভ্যন্তরীণ পুনঃগঠনে সক্ষম হয়।
(iv) এই সন্ধির দ্বারা লেনিন রাশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করে রুশ বিপ্লবকে রক্ষা করতে সক্ষম হন।
(v) লেনিন এই সন্ধিকে নিতান্তই সাময়িক ব্যবস্থা বলে মনে করতেন। তাই প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির আত্মসমর্পণের পর তিনি এই সন্ধি বাতিল করেন।
মূল্যায়ন ঃ তাৎক্ষণিক বিচারে ব্রেস্ট লিটভস্কের সন্ধির দ্বারা রাশিয়ার অনেক ক্ষতি হয়েছিল। এই সন্ধির দ্বারা প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকে রাশিয়া নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছিল এবং এর ফলে রাশিয়ায় সুদূরপ্রসারী সুফল মিলেছিল।
আরও পড়ুন ঃ