রাশিয়ার অভ্যন্তরে বলশেভিক বিপ্লবের গুরুত্ব / রাশিয়ার অভ্যন্তরে রুশ বিপ্লবের বিপ্লবের গুরুত্ব / রাশিয়ার অভ্যন্তরে নভেম্বর বিপ্লবের গুরুত্ব -
১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়ার মার্কসবাদী বলশেভিক দলের নেতৃত্বে বলশেভিক বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল। এই বিপ্লব রাশিয়ার সমাজিক, রাজনীতি, অর্থনীতি ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটিয়েছিল। নিন্মে বলশেভিক বিপ্লবের গুরুত্ব আলোচনা করা হল -
সর্বহারার একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠা ঃ ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসের বিপ্লবে রাশিয়ায় জারতন্ত্রের পতন ঘটেছিল। এরপর সেখানে অস্থায়ী প্রজাতন্ত্র স্থাপিত হয়। কিন্তু নবগঠিত এই সরকার দেশের সাধারণ মানুষের দাবি পূরণে ব্যর্থ হলে নভেম্বর মাসে পুনরায় বিপ্লব শুরু হয় বলশেভিকদের নেতৃত্বে। বলশেভিকরা প্রজাতন্ত্রের পতন ঘটিয়ে রাশিয়ায় 'সর্বহারার একনায়কত্ব' প্রতিষ্ঠা করে। এরফলে রাশিয়ার নতুন নাম হয় 'ইউনয়ন অব সোভিয়েত সোশ্যালিস্ট রিপাবলিক'(USSR).
সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠা ঃ লেনিনের নেতৃত্বে বলশেভিক দল রাষ্ট্রের ক্ষমতা দখল করে রাশিয়ায় পুরাতনতন্ত্রের পতন ঘটায়। এরফলে রাশিয়ায় সাম্যবাদ বা সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বিশ্ব ইতিহাসে রাশিয়া প্রথম সাম্যবাদী রাষ্ট্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে।
রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ ঃ বলশেভিকরা ছিল সাম্যবাদের আদর্শে বিশ্বাসী। নতুন বলশেভিক সরকার রাশিয়ায় ব্যক্তিগত মালিকানার অবসান ঘটায়। তারা উৎপাদনের উপকরণ ও প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর রাষ্ট্রীয় মালিকানা প্রতিষ্ঠা করে সর্বস্তরের মানুষের কল্যাণের চেষ্টা করে।
কৃষক ও শ্রমিকদের স্বার্থ ঃ সাম্যবাদী সরকার জমিদারদের ক্ষতিপূরণ না দিয়ে তাদের জমিগুলি বাজেয়াপ্ত করে নেয়। এরপর সেই জমি গুলিকে কৃষকদের মধ্যে বণ্টন করা হয়। কলকারখানা গুলির ব্যক্তিগত মালিকানার অবসান ঘটিয়ে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রনে আনা হয় এবং তা পরিচালনার দায়িত্ব দেশের শ্রমিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
অ-রুশদের মর্যাদাদান ঃ বলশেভিকরা তাদের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার পর রাশিয়ায় বসবাসকারী অ-রুশ জাতিগুলির সমান অধিকার ও মর্যাদা দিয়ে তাদের রুশ জনজীবনের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
মূল্যায়ন ঃ রুশ বিপ্লব বা বলশেভিক বিপ্লবের গুরুত্ব শুধুমাত্র রাশিয়ার অভ্যন্তরেই সীমাবদ্ধ ছিল না। বিশ্বের নানা দেশেও এর প্রভাব পড়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার পর বলশেভিক মতবাদ একটি বিশ্ব-আন্দোলনে পরিণত হয়েছিল।
আরও পড়ুন ঃ