রাশিয়ার নারোদনিক আন্দোলন বা জনতাবাদী আন্দোলন / রাশিয়ার নারদনিক আন্দোলন এর উপর একটি টীকা লেখ -
১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়ার নিহিলিস্ট বিপ্লবীরা জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডারকে হত্যা করে। কিন্তু তাদের এই আন্দোলন থেকে সাধারণ মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিলে আন্দোলন ব্যর্থ হয়। নিহিলিস্ট আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার পর রাশিয়ায় নারোদনিক আন্দোলন বা জনতাবাদী আন্দোলন শক্তিশালী হয়ে ওঠে। নিন্মে নারোদনিক আন্দোলন বা জনতাবাদী আন্দোলন সম্পর্কে আলোচনা করা হল -
আন্দোলনের সূত্রপাত ঃ রাশিয়ায় নারোদনিক আন্দোলন বা জনতাবাদী আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে ১৮৭০ -এর দশকে। নারোদনিক বিপ্লবীরা ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে 'জনতার কাছে যাওয়ার' আন্দোলন শুরু করে। ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে এই আন্দোলনের জনসংযোগ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে যায়।
আন্দোলনের শক্তিবৃদ্ধি ঃ ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়ায় নিহিলিস্ট আন্দোলন দুর্বল হয়ে পড়ে। এরপর নিহিলিস্ট আন্দোলনকারীরা জনতাবাদী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মিশে যায় ফলে নারোদনিক আন্দোলন বা জনতাবাদী আন্দোলন শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
আন্দোলনের প্রচারাভিযান ঃ আন্দোলনের ভাবধারা সাধারণ কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নারোদনিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষিত যুবক-যুবতীরা গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে যায়। তারা দেশের কৃষকদের সচেতন করার জন্য বিভিন্নভাবে প্রচার চালাতে থাকে। কিন্তু রাশিয়ার কৃষকরা সচেতন না হওয়ায় এই আন্দোলন তেমন সাফল্য পায়নি।
সন্ত্রাসবাদ ঃ দেশের সাধারণ জনগণকে আন্দোলনে শামিল করতে ব্যর্থ হলে নারোদনিক আন্দোলনকারীরা সন্ত্রাসের পথে পা বাড়ায়। ফলে তাদের বিরুদ্ধে তীব্র সরকারি দমননীতি চালু হয়।
মূল্যায়ন ঃ সরকারি দমননীতির ফলে শেষ পর্যন্ত নারোদনিক আন্দোলন বা জনতাবাদী আন্দোলন ব্যর্থ হয়। কিন্তু এই আন্দোলন রাশিয়ার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই আন্দোলন প্রমাণ করেছিল, কোন আন্দোলন সফল করতে গেলে দরকার সঠিক নেতৃত্ব ও সঠিক পরিকল্পনা। এই আন্দোলনের ব্যর্থতা রুশ বিপ্লবের গুরুত্বপূর্ণ নীতি নিরধারনে সাহায্য করেছিল।