প্রিয় ছাত্রছাত্রী, আজ আমি তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করব নবম শ্রেণির ইতিহাসের একটি প্রশ্ন "নাৎসিবাদ ও ফ্যাসিবাদের পার্থক্য লেখ"।
নাৎসিবাদ ও ফ্যাসিবাদের পার্থক্য -
১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ইউরোপের অভ্যন্তরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক ফলাফল লক্ষ করা যায়। যেমন ইতালি, জার্মানি এবং স্পেনে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জয়ী মিত্রশক্তির সদস্য দেশ ইতালিকে ভার্সাই সন্ধির দ্বারা বিভিন্নভাবে নিরাশ করা হয়েছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়েই বিভিন্ন সমাজতন্ত্রী এবং সাম্যবাদীদের দায়িত্বজ্ঞানহীন কার্যকলাপ ইতালিতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল। এই পরিস্থিতিকে হাতিয়ার করে ইতালির রাজনীতিকে আবির্ভাব ঘটে ফ্যাসিবাদী নেতা মুসোলিনির। তিনি ইতালির শাসনক্ষমতা দখল করে সেখানে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলেন।
একদিকে ইতালিতে ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় এবং অন্যদিকে নাৎসি নেতা হিটলারের নেতৃত্বে জার্মানিতে নাৎসিবাদী একনায়কতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। ভার্সাই সন্ধির মাধ্যমে জার্মানিকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামরিক দিক থেকে পঙ্গু করে দেওয়ার চেষ্টা জার্মানবাসী মেনে নিতে পারেনি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানির ভাইমার প্রজাতান্ত্রিক সরকার আন্তর্জাতিক অপমান, অর্থনৈতিক দুরাবস্থা এবং অভ্যন্তরীণ অরাজকতার কোন নিরসন করতে পারেনি। জার্মানির এই সংকটময় পরিস্থিতিতেই হিটলারের আবির্ভাব ঘটে।
নাৎসিবাদ এবং ফ্যাসিবাদ উভয়ই কমিউনিস্ট বিরোধী এবং উভয় দলের উদ্দেশ্যই ছিল জনসাধারণের ওপর কর্তৃত্ব স্থাপন করা। উভয়ের সর্বোচ্চ লক্ষ্য ছিল একটি সর্বাত্মক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করা। নাৎসিবাদ এবং ফ্যাসিবাদের মধ্যে বেশি মিল থাকলেও কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন -
(i) প্রথম থেকেই নাৎসিবাদ কঠোর ইহুদী বিদ্বেষী ছিল।
কিন্তু, ফ্যাসিবাদ নাৎসিবাদের মত এতটা ইহুদী বিদ্বেষী ছিল না।
(ii) নাৎসিবাদে হিটলার-ই ছিলেন সর্বেসর্বা।
কিন্তু, ফ্যাসিবাদের প্রধান মুসোলিনি হলেও ইতালিতে রাজতন্ত্রের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়।
(iii) নাৎসিবাদ চরম নির্মমতার আঁতুড়ঘর হিসাবে পরিচিত ছিল।
কিন্তু, নাৎসিদের মত ফ্যাসিবাদ এতটা নির্মম ছিল না।
(iv) ধর্মনীতির দিক থেকে দেখলে নাৎসিবাদ বেশি পরিমাণে সফলতার মুখ দেখতে পায়নি।
কিন্তু, মুসোলিনির নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিবাদ অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়েছিল।
আরও পড়ুন ঃ