প্রিয় ছাত্রছাত্রী, আজ আমি তোমাদের সাথে শেয়ার করব "ইউরোপীয় শক্তি সমবায়" বা "কনসার্ট অব ইউরোপ" -
১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ভিয়েনা সম্মেলনের পরবর্তীকালে ইউরোপের বৃহৎ শক্তিগুলি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল 'ইউরোপীয় শক্তি সমবায়' বা 'কনসার্ট অব ইউরোপ'। নিন্মে ইউরোপীয় শক্তি সমবায়ের উদ্দেশ্য ও ভিত্তি সম্পর্কে আলোচনা করা হল-
কনসার্ট অব ইউরোপ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ঃ ইউরোপীয় শক্তি সমবায় বা কনসার্ট অব ইউরোপ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যগুলি ছিল -
(i) ভিয়েনা সম্মেলনের সিদ্ধান্তগুলিকে বাস্তবায়িত করা।
(ii) নেপোলিয়নের মতো বৃহৎ শক্তি যাতে আর কখনও ইউরোপে মাথাচাড়া দিতে না পারে তা সুনিশ্চিত করা।
(iii) ফরাসি বিপ্লবের মত ধ্বংসাত্মক ঘটনার হাত থেকে ইউরোপকে রক্ষা করা।
(iv) সর্বোপরি ইউরোপের স্থায়ী শান্তি বজায় রাখা।
শক্তি সমবায়ের ভিত্তি ঃ দুটি চুক্তির ওপর ভিত্তি করে ইউরোপীয় শক্তি সমবায় প্রতিষ্ঠা করা হয়। এগুলি হল -
(i) ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী মেটারনিক কর্তৃক রুপায়িত চতুঃশক্তি চুক্তি।
(ii) ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডার কর্তৃক রুপায়িত পবিত্র চুক্তি।
চতুঃশক্তি চুক্তির সম্মেলন ঃ ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮২৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়কালে চতুঃশক্তি চুক্তির অধীনে পাঁচটি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এই সম্মেলন গুলি হল -
(i) ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে আই-লা-সাপেল সম্মেলন।
(ii) ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে ট্রপো সম্মেলন।
(iii) ১৮২১ খ্রিস্টাব্দের লাইবাখ বৈঠক।
(iv) ১৮২২ খ্রিস্টাব্দে ভেরোনা বৈঠক।
(v) ১৮২৫ খ্রিস্টাব্দের সেন্ট পিটার্সবার্গ বৈঠক।
ইউরোপীয় শক্তি সমবায়ের পতন ঃ ঊনবিংশ শতকের প্রথম দিকে তুরস্কের অধীনস্থ গ্রিস স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলনে রাশিয়া গ্রিসের পক্ষ নেয় ফলে রাশিয়ার জারের ডাকা সেন্ট পিটার্সবার্গে শক্তি সমবায়ের পঞ্চম সম্মেলনে ইংল্যান্ড যোগদান করেনি। শক্তি সমবায়ের সদস্যদের মধ্যে গ্রিসকে নিয়ে মতপার্থক্য শুরু হয়। শেষপর্যন্ত ১৮২৫ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে ইউরোপীয় শক্তি সমবায় বা কনসার্ট অব ইউরোপের পতন ঘটে।