ইতিহাসের উপাদান হিসেবে সরকারি নথিপত্রের সীমাবদ্ধতা -
আধুনিক ইতিহাস চর্চার উপাদান হিসাবে সরকারি নথিপত্র বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এককথায় সরকারি নথিপত্র বলতে বোঝায় পুলিশ, গোয়েন্দা অথবা সরকারি আধিকারিকদের রিপোর্ট, চিঠিপত্র, প্রতিবেদন প্রভৃতি। এইসব সরকারি নথিপত্রগুলি মহাফেজখানায় সংরক্ষিত থাকে। এগুলি ছাড়াও পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের নথিপত্রও ইতিহাসের রচনার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। নিন্মে ইতিহাসের উপাদান হিসাবে সরকারি নথিপত্রের সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করা হল -
আমলাতান্ত্রিক মানসিকতার প্রতিফলন ঃ সরকারি নথিপত্র, যেমন - গোয়েন্দা, পুলিশ, সরকারি আধিকারিকদের বিবরণে ব্রিটিশ শাসকের ঔপনিবেশিক দৃষ্টিভঙ্গি, শাসন ও দমনমূলক চরিত্র ফুটে উঠেছে। ফলে এর ঐতিহাসিক সত্যতা নিয়ে সন্দেহ আছে।
নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ ঃ সরকারি নথিপত্র গুলিতে সরকারি দৃষ্টিভঙ্গির আধিক্য দেখা যায়। এগুলি কখনোই জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে লেখা হয় না। তাই এগুলি নিরপেক্ষতা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
বিকৃত তথ্য ঃ বিভিন্ন সরকারি দস্তাবেজগুলিতে অনেক সময়ই তথ্য বিকৃত থাকে। তাই সমকালীন ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে এগুলি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
সরকারি কার্যকলাপের অস্পষ্টতা ঃ সরকারি আধিকারিকদের রিপোর্ট ও অন্যান্য নথিপত্রগুলিতে সরকারি কর্মচারীদের কার্যকলাপ বিষয়ে সঠিক তথ্য দেওয়া থাকে না। ফলে তথ্যের অস্পষ্টতা থাকায় ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা তৈরি হয়।
মূল্যায়ন ঃ সবশেষে বলা যায় যে, আধুনিক ইতিহাস রচনার উপাদান হিসাবে সরকারি নথিপত্রের ভূমিকা অনস্বীকার্য হলেও তা ব্যবহারের সময় সতর্কতা অবলম্বন জরুরি। এই তথ্যগুলিকে অন্য তথ্যের সাথে যাচাই করে নিলে ইতিহাস রচনা সুসংগঠিত ও প্রকৃত তথ্যসমৃদ্ধ হতে পারে, তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।