ঔপনিবেশিক অরণ্য আইনের বিরুদ্ধে আদিবাসীদের প্রতিক্রিয়া -
ব্রিটিশ সরকার ভারতের অরণ্যগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার জন্য ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে অরণ্য সনদ, ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে বনবিভাগ গঠন, ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় অরণ্য আইন, ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় ভারতীয় অরণ্য আইন পাস করে। ফলে অরণ্যের উপর নির্ভরশীল ভারতের আদিবাসী জনগণ তাদের অধিকার হারিয়ে ব্রিটিশ সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। নিম্নে ঔপনিবেশিক অরণ্য আইনের বিরুদ্ধে আদিবাসীদের প্রতিক্রিয়া আলোচনা করা হল -
বনজ সম্পদ ব্যবহার নিষিদ্ধকরণের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ঃ বনচারী মানুষেরা বনের কাঠ, ফল, পাতা ইত্যাদি ব্যবহার করত। এই আইনগুলির দ্বারা তাদের এই চিরাচরিত অধিকার বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
ঝুম চাষীদের প্রতিক্রিয়া ঃ বনে বসবাসকারী মানুষেরা ঝুম চাষ করতো। অরণ্য আইনের ফলে বনে তাদের অবাধ প্রবেশ, চলাচল, বসবাস, আগুন জালানো, ইত্যাদি বন্ধ হলে তারা অসন্তুষ্ট হয়ে ওঠে।
পশুপালক ও শিকারীদের ক্ষোভ ঃ এই আইনগুলির দ্বারা বনে পশু চরানো পশু শিকার ইত্যাদি নিষিদ্ধ হয়। ফলে জীবন ও জীবিকার সংকট দেখা যায়। যার পরিণতি ঘটে বিদ্রোহ ও প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে। যেমন -
(i) হায়দ্রাবাদের বস্তার অঞ্চলে আদিবাসীরা ব্রিটিশ কোম্পানির পুলিশ বাহিনীর আস্তানাগুলিতে আক্রমণ করে।
(ii) মহারাষ্ট্রের থানে জেলার উপজাতী কৃষকরাও সরকারের বিরুদ্ধে হিংসার আশ্রয় নেয়।
(iii) তাছাড়া ত্রিবাঙ্কুর, উত্তরাখণ্ড, জঙ্গলমহল এলাকায় আদিবাসীরা ব্রিটিশ সরকারের অরণ্য আইনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তারা বিভিন্নভাবে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করে, লুট চালায় ও বনে আগুন লাগিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিক্রিয়া জানায়।
মূল্যায়ন ঃ এইভাবে আদিবাসীরা বিভিন্ন জায়গায় বিদ্রোহ ঘোষণা করে। অনেক জায়গায় তারা তাদের এলাকায় বহিরাগত ব্যবসায়ীদের আক্রমণ করে এলাকায় ছাড়া করে।
আরও পড়ুন ঃ