প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদী / প্রাচ্যপন্থী ও পাশ্চাত্যপন্থী -
ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনে ইস্ট ইন্ডীয়া কোম্পানিকে এদেশে জনশিক্ষার জন্য বার্ষিক এক লক্ষ টাকা ব্যয় করার নির্দেশ দেয়। এই টাকা পাওয়ার জন্য শিক্ষাবিদরা দুটি দলে বিভক্ত হয়েছিলেন। দেশীয় শিক্ষার সমর্থকরা প্রাচ্যবাদী এবং ইংরেজি শিক্ষার সমর্থকরা পাশ্চাত্যবাদী নামে পরিচিতি লাভ করেন।
প্রাচ্যবাদী / প্রাচ্যপন্থী ঃ ভারতে যে চিরাচরিত শিক্ষা প্রচলিত ছিল, তা দেশীয় শিক্ষা বা প্রাচ্য শিক্ষা নামে পরিচিত। এই শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত ছিল সংস্কৃত, আরবি ও ফারসি ভাষা।
পাঠশালা চতুষ্পাঠি ও টোলে সংস্কৃত শিক্ষা দেওয়া হতো। পন্ডিত ও অধ্যাপকরা এইসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করতেন। প্রায় প্রতিটি গ্রামেই পাঠশালার অস্তিত্ব ছিল। বাংলায় প্রায় ১৮০০ টি টোলের কথা জানা যায়। যার মধ্যে নবদ্বীপ ও বিক্রমপুর ছিল বিখ্যাত সংস্কৃত শিক্ষা কেন্দ্র।
মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে আরবি ও ফারসি ভাষা শিক্ষার চল ছিল। গ্রামের মসজিদের পাশে মক্তব থাকত। সেখানে মৌলবিরা আরবি ও ফারসি ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা দান করতেন। উচ্চশিক্ষার জন্য ছিল মাদ্রাসা। ঢাকা, মুর্শিদাবাদ, পাটনা ছিল আরবি ও ফারসি শিক্ষার কেন্দ্র। এই দেশীয় শিক্ষার সমর্থকদের প্রাচ্যবাদী বলা হতো। এদের নেতা ছিলেন এইচ টি প্রিন্সেপ।
পাশ্চাত্যবাদী / পাশ্চাত্যপন্থী ঃ কলকাতা কেন্দ্রিক কয়েকটি ইংরেজি স্কুলে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য, ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান ও গণিত শিক্ষা দেওয়া হতো। এই শিক্ষাকে পাশ্চাত্য শিক্ষা বলা হয়। এই শিক্ষার সমর্থকদের পাশ্চাত্যবাদী বলা হত।এই দলের সমর্থক ছিলেন ট্রাভেলিয়ান, মেকলে প্রমুখ।
মূল্যায়ন ঃ ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে মেকলে মিনিটের মাধ্যমে পাশ্চাত্য শিক্ষাকে সরকারি শিক্ষানীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়। এরফলে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা চালু হয়।
আরও পড়ুন ঃ