ইতালির রেনেসাঁর সঙ্গে বাংলার রেনেসাঁর সাদৃশ্য / ইতালির নবজাগরণের সঙ্গে বাংলার নবজাগরণের সাদৃশ্য -
চতুর্দশ শতক থেকে ষোড়শ শতকের মধ্যে ইউরোপের ইতালিতে সাহিত্য, শিল্পকলা, বিজ্ঞান ও রাজনীতির ক্ষেত্রে যে স্ফুরণ দেখা যায়, তা ইতালীয় রেনেসাঁ নামে পরিচিত। উনিশ শতকে বাংলাতেও রেনেসাঁ দেখা যায়। ইতালির রেনেসাঁর সঙ্গে বাংলার রেনেসাঁর সাদৃশ্য গুলি নিম্নে আলোচনা করা হলো -
প্রথমত ঃ মধ্যযুগীয় অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের হাত থেকে ইতালির রেনেসাঁ যেমন ইউরোপকে মুক্তির পথ দেখিয়েছিল ঠিক তেমনি ভারতের মধ্যযুগের অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের হাত থেকে উনিশ শতকে বাংলাকে মুক্তির পথ দেখিয়েছিল এই রেনেসাঁ।
দ্বিতীয়ত ঃ ইতালির রেনেসাঁয় ধ্রুপদী সাহিত্য, যথা গ্রিক ও ল্যাটিন সাহিত্যের ব্যাপক চর্চা শুরু হয়। তেমনি বাংলাতেও উনিশ শতকে প্রাচ্যবাদীরা ভারতের প্রাচীন সংস্কৃত ও মধ্যযুগের ফারসি সাহিত্যের চর্চা করেন।
তৃতীয়ত ঃ ইতালির রেনেসাঁর মানবতাবাদ আমরা রাজা রামমোহন রায়, বিদ্যাসাগরের সমাজ সংস্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিকশিত হতে দেখতে পায়।
চতুর্থ ঃ ইতালির রেনেসাঁতে যে স্বাধীন ও যুক্তিবাদী মানসিকতা দেখা যায় তা বাংলায় ডিরোজিও ও তাঁর শিষ্যদের প্রচলিত কুসংস্কারবিরোধী আন্দোলনেও সেই একই যুক্তিবাদী দৃষ্টিভঙ্গি পরিলক্ষিত হয়েছে।
পঞ্চমত ঃ ইতালির নবজাগরণে মেদিচি পরিবারের যে ভূমিকা ছিল, তা বাংলার নবজাগরণের ক্ষেত্রে ঠাকুর পরিবার গ্রহণ করেছিল।
মূল্যায়ন ঃ রেনেসাঁ প্রসূত যুক্তিবাদ ও বস্তুবাদ থেকে বিজ্ঞান চর্চার প্রচেষ্টা শুরু হয়। এই জন্য উনিশ শতকের নবজাগরণকে বাংলার রেনেসাঁ বা নবজাগরণ বলা হয়।
আরও পড়ুন ঃ