প্রিয় ছাত্রছাত্রী, আজ আমি তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করব "উডের প্রতিবেদন কি" / "উডের নির্দেশনামা কি" / "উডের ডেসপ্যাচ কি" / "উডের ডেসপ্যাচ কে ম্যাগনাকার্টা বলা হয় কেন" / "উডের নির্দেশনামাকে এদেশের শিক্ষাবিস্তারের মহাসনদ বলা হয় কেন" -এই প্রশ্নটি।
উডের প্রতিবেদন / নির্দেশনামা / ডেসপ্যাচ / সুপারিশ -
বোর্ড অফ কন্ট্রোলের সভাপতি স্যার চার্লস উড ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের জন্য ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দের ১৯ শে জুলাই একটি নির্দেশনামা প্রকাশ করেন। এটি উডের নির্দেশনামা বা প্রতিবেদন নামে পরিচিত।
চার্লস উডের সুপারিশ ঃ উডের নির্দেশনামা বা প্রতিবেদনের সুপারিশ গুলি ছিল নিম্নরূপ -
(i) শিক্ষার প্রসারের জন্য স্বতন্ত্র শিক্ষাবিভাগ গঠন করা।
(ii) প্রত্যেক প্রেসিডেন্সি শহরে, যথা - কলকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা।
(iii) সুদক্ষ শিক্ষক তৈরির জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ বা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ স্থাপন করা।
(iv) প্রদেশগুলিতে দেশীয় ভাষার মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষা প্রদান করা।
(v) নারী শিক্ষার প্রসার ঘটানো।
(vi) মেধাবৃত্তি দান করা।
(vii) পাঠ্যক্রমের সাদৃশ্য ও বিন্যাস ঘটানো প্রভৃতি।
চার্লস উডের সুপারিশের ফলাফল ঃ চার্লস উডের নির্দেশনামার ফলে -
(i) ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে বড়োলাট লর্ড ডালহৌসি বাংলা, বোম্বাই, পাঞ্জাব প্রভৃতি প্রদেশে শিক্ষা দপ্তর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
(ii) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা, মুম্বাই ও মাদ্রাজে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এরফলে ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ ভারতে সরকারি বিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল ১৬৯ এবং ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে ভারতে সরকারি বিদযালের সংখ্যা ছিল ১৩৬৩ টি।
গুরুত্ব ঃ উডের প্রতিবেদন পেশ করার আগে পর্যন্ত ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার গতি ছিল অত্যন্ত ধীর। উডের রিপোর্টের ফলে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বহু স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে। কলকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। ভারতীয় শিক্ষার ইতিহাসে এটি ছিল একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এইজন্য উডের নির্দেশনামাকে ভারতীয় শিক্ষার মহাসনদ বা ম্যাগনাকার্টা বলা হয়।
আরও পড়ুন ঃ