প্রিয় ছাত্রছাত্রী, আজ আমি তোমাদের সঙ্গে আলোচনা করব "পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে ডেভিড হেয়ারের ভূমিকা লেখ" - এই প্রশ্নটি।
স্কটল্যান্ডের অধিবাসী ডেভিড হেয়ার ছিলেন একজন জনদরদী মানুষ। তিনি ঘড়ি ব্যবসায়ী রূপে ভারতে এসেছিলেন। বাংলায় আসার পর তিনি এখানকার মানুষের কল্যাণ ও তাদের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের উদ্দেশ্যে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। নিম্নে ডেভিড হেয়ারের পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে অবদান আলোচনা করা হল -
হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠা -
ভারতে ডেভিড হেয়ারের প্রথম উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠা করা।
ডেভিড হেয়ার স্থানীয় জনগণকে পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের কথা চিন্তা করেছিলেন। এই বিষয়ে তিনি কলকাতা সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি স্যার হাইড ইস্টের সমর্থন আদায় করেন এবং স্যার এডওয়ার্ড হাইড ইস্ট, বৈদ্যনাথ মুখার্জি ও ডেভিড হেয়ারের উদ্যোগে ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দের ২০ শে জানুয়ারি হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠাা হয়।
ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা -
১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে ডেভিড হেয়ার কলকাতায় ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। নিম্নে ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যগুলি আলোচনা করা হল -
(i) ভালো পাঠ্য বই প্রকাশ ঃ ডেভিড হেয়ার ইংরেজি ও ভারতীয় ভাষায় ভালো পাঠ্যবই প্রকাশ করে পাঠ্যবইয়ের অভাব দূর করতে চেয়েছিলেন।
(ii) শিক্ষার প্রসার ঘটানো ঃ ডেভিড হেয়ার অল্প দামে আবার কখনো বিনামূল্যে বই প্রদান করতেন। তার উদ্দেশ্য ছিল পাঠ্যবই প্রকাশ করে শিক্ষার প্রসার ঘটানো।
ক্যালকাটা স্কুল সোসাইটি প্রতিষ্ঠা -
ডেভিড হেয়ারের উদ্যোগে ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে ক্যালকাটা স্কুল সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। নিম্নে ক্যালকাটা স্কুল সোসাইটি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য গুলি তুলে ধরা হল -
(i) কলকাতায় যেসব স্কুল ছিল সেগুলির উন্নতি করা।
(ii) বিভিন্ন জায়গায় নতুন স্কুল প্রতিষ্ঠা করা ইত্যাদি।
এছাড়া ডেভিড হেয়ার নারী শিক্ষার প্রসারে যথেষ্ট সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি বিভিন্ন স্কুল ও জ্ঞান চর্চা মূলক প্রতিষ্ঠানে প্রচুর অর্থ সাহায্য করেছিলেন। আধুনিক শিক্ষার প্রসারে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তার অবদানের প্রতি সম্মান জানিয়ে অনেক স্কুল ও রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে। যেমন - হেয়ার স্কুল, হেয়ার স্ট্রিট ইত্যাদি।
আরও পড়ুন ঃ