ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারে ড্রিঙ্কওয়াটার বেথুনের ভূমিকা আলোচনা করো

ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারে ড্রিঙ্কওয়াটার বেথুনের ভূমিকা -

জন এলিয়ট ড্রিংকওয়াটার বিটন বা বেথুন সাহেব ছিলেন ইস্ট কোম্পানির একজন উচ্চপদস্থ কর্মচারী। তিনি হিন্দু ফিমেল স্কুল অর্থাৎ বর্তমান বেথুন স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি বাংলার নারী জাগরণের সূত্রপাত ঘটিয়েছিলেন। 

বেথুন স্কুল প্রতিষ্ঠা ঃ ভারতবর্ষের নারীদের দুঃখ, দুর্দশা ও শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে বেথুন সাহেব ভালোভাবেই পরিচিত ছিলেন। এই সময় এদেশে নারীদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দেওয়ার উদ্যোগ শুরু হয়। দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায় ও রামগোপাল ঘোষ বেথুনকে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় নানারকম সহযোগিতা করেছিলেন। দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায় মির্জাপুরে তার একটি বাড়ি বিদ্যালয় স্থাপনের কাজে দান করেছিলেন। ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দের ৭ মে বেথুনের প্রচেষ্টায় একটি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছিল তখন এই স্কুলটির নাম ছিল হিন্দু ফিমেল স্কুল, যার বর্তমান নাম বেথুন স্কুল। বেথুন তাঁর যাবতীয় স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি এই স্কুলের জন্য দান করেছিলেন। 

বিদ্যাসাগরের যোগদান ঃ বেথুনের বিদ্যালয়ের খ্যাতি ও মর্যাদা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল যখন বিদ্যাসাগর তার স্কুলে যোগ দেন। বেথুনের অনুরোধে বিদ্যাসাগর ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে এই বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির সেক্রেটারি পদে আসীন হন।

সম্ভ্রান্ত পরিবারের নারীদের শিক্ষা ঃ বেথুনের বিদ্যালয়ে রামগোপাল ঘোষ, দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়, মদনমোহন তর্কালঙ্কার, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মতো ব্যক্তি যুক্ত থাকায় এখানে সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়েরা শিক্ষা লাভের জন্য আসত। অভিভাবকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটির ছাত্রীদের ভর্তির ব্যবস্থা দেখাশোনা করতেন। 

মূল্যায়ন ঃ ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দের ১২ ই আগস্ট কলকাতায় বেতন সাহেবের জীবনাবসান ঘটে। তিনি তার বিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময় বলেছিলেন, আমি বিশ্বাস করি আজকের দিনটিতে একটি বিপ্লবের সূচনা করতে যাচ্ছি, আমরা সফল হয়েছি এবং আজকে যে আদর্শের বীজ রোপিত হল তা আর কোনদিন বিফল হবেনা। তার এই বাণী চিরসত্য হয়ে আছে ও আগামী দিনেও থাকবে।


আরও পড়ুন ঃ

১. পাশ্চাত্য শিক্ষায় ডেভিড হেয়ারের ভূমিকা লেখ

Post a Comment

Previous Post Next Post