মধুসূদন গুপ্তের শবব্যবচ্ছেদ -
বাংলা তথা ভারতের আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে মধুসূদন গুপ্ত ছিল একটি উল্লেখযোগ্য নাম। তিনি ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দের ২৮ অক্টোবর কলকাতা মেডিকেল কলেজে প্রথম শবব্যবচ্ছেদ করেছিলেন। সেজন্য তিনি আজও বিখ্যাত হয়ে আছেন।
পারিবারিক পরিচয় ঃ হুগলী জেলার বৈদ্যবাটি গ্রামের একটি বৈদ্য পরিবারের মধুসূদন গুপ্ত জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সম্ভবত তাঁর জন্ম হয়েছিল ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে। তার পিতামহ ছিলেন হুগলির নবাব পরিবারের গৃহচিকিৎসক। আয়ুর্বেদ চিকিৎসক হিসেবে তাঁর পরিবারের খুব নাম ডাক ও প্রভাব প্রতিপত্তি ছিল সে সময়। তাঁর পিতা ছিলেন বলরাম গুপ্ত।
শবব্যবচ্ছেদে মধুসূদন গুপ্তের ভূমিকা ঃ বর্তমান চিকিৎসাশিক্ষার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো শবব্যবচ্ছেদ বা মড়া কাটা করে জ্ঞানার্জন। কলকাতা মেডিকেল কলেজে শবব্যবচ্ছেদ করে জ্ঞান অর্জনের পথে প্রধান বাঁধা ছিল হিন্দু ধর্মের কুসংস্কার।
১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দের ২৮ অক্টোবর মধুসূদন গুপ্ত প্রথম শবব্যবচ্ছেদ করেছিলেন। এই ঘটনাটি ছিল ভারতের চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে প্রথম সংস্কার ভাঙার ঘটনা।
শবব্যবচ্ছেদের সময় মধুসূদন গুপ্তের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন উমাচরণ শেঠ, রাজকৃষ্ণ দে, দ্বারকানাথ গুপ্ত, নবীনচন্দ্র মিত্র প্রমূখ ছাত্র।
মধুসূদন গুপ্তের হাতে শবব্যবচ্ছেদ ঘটলে দীর্ঘদিনের কুসংস্কার ও গোঁড়া পণ্ডিতদের বাধানিষেধের বেড়া ভেঙে যায়। এরফলে ভারত চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করে।
কলকাতা মেডিকেল কলেজে দীর্ঘদিন কাজ করার পর অবশেষে ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দের ১৫ নভেম্বর মধুসূদন গুপ্তের জীবনাবসান ঘটে।