ক্ষুদ্রাশ্মীয় আয়ুধ বা ক্ষুদ্র প্রস্তর যুগ বা মধ্য প্রস্তর যুগ -
প্রাচীন প্রস্তর ও নব্য প্রস্তর যুগের মধ্যবর্তী সময়কালকে মধ্য প্রস্তর যুগ বলে। ঐতিহাসিকরা অনুমান করে থাকেন খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০০ বছর থেকে ১০০০০ বছরের মধ্যবর্তী সময়ে এই যুগের বিস্তার ঘটেছিল। নিম্নে ক্ষুদ্রাশ্মীয় আয়ুধ বা মধ্য প্রস্তর যুগ সম্পর্কে আলোচনা করা হল -
ভৌগলিক কারণে পরিবর্তন ঃ প্লেইস্টোসিন যুগের শেষদিকে তুষার যুগের অবসান ঘটলে সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি পায়। তেমনই বনভূমি ও মরুভূমির জন্ম হয়। ফলে মধ্য প্রস্তর যুগের মানুষের জীবনধারাতেও পরিবর্তন আসে।
হাতিয়ার ঃ এযুগের হাতিয়ারগুলি পূর্ববর্তী যুগের তুলনায় উন্নত ও আকারে ক্ষুদ্র হয়। পাথর ছাড়াও জীবজন্তুর হাড়, দাঁত ইত্যাদি দিয়ে তৈরি তির-ধনুক, হারপুন, বড়শি, বাটালি প্রভৃতি ছোট আকারের হাতিয়ারের ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। হাতিয়ারের ক্ষুদ্র আকারের জন্যই এই যুগকে ক্ষুদ্রাশ্মীয় আয়ুধ বা ক্ষুদ্র প্রস্তর যুগ বলা হয়।
জীবিকা ও খাদ্য ঃ মধ্য প্রস্তর যুগের মানুষের প্রধান জীবিকা ছিল পশুশিকার ও ফলমূল সংগ্রহ। খাদ্য তৈরি করার কৌশল তখনও তাদের আয়ত্তে আসেনি। নদী ও সমুদ্রের উপকূলবর্তী বাসিন্দারা মাছ ও শামুক শিকার করত। এযুগের মানুষ কুকুর, ছাগল, গোরু প্রভৃতি প্রাণীকে পোষ মানিয়েছিল।
যানবাহন ঃ এযুগের মানুষ বরফের ওপর দিয়ে চলার জন্য কুকুরে টানা স্লেজগাড়ির ব্যবহার করত। জলপথে চলার জন্য তারা গাছের গুড়ি খোদাই করে নৌকা তৈরি করত।
চিত্রকলা ঃ এযুগের মানুষ তাদের জীবনযাত্রার চিত্র বিভিন্ন গুহায় এঁকেছিল। এছাড়া তারা জ্যামিতিক আকারের ত্রিকোণ, চতুষ্কোণ, বৃত্তাকার চিত্র আঁকত।
মূল্যায়ন ঃ মধ্য প্রস্তর যুগে মৃত মানুষকে সমাধিস্থ করা হত। মধ্যপ্রদেশের ভীমবেটকা, পাঞ্জাব, গুজরাট, রাজস্থান প্রভৃতি অঞ্চলে এই যুগের নিদর্শন পাওয়া গেছে। তেমনই ভারতের বাইরে পাকিস্তানের সংখাও অঞ্চল-সহ রাশিয়া, সুইডেন, ফিনল্যান্ড প্রভৃতি দেশেও মধ্যপ্রস্তর যুগের নিদর্শন মিলেছে।
আরও পড়ুন ঃ