খাদ্য গ্রহণ সম্পর্কে সামাজিক ও ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা কিভাবে ইতিহাসকে প্রভাবিত করেছে -
নতুন সামাজিক ইতিহাস চর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল মানুষের খাদ্যাভ্যাস। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষের খাদ্যাভ্যাস ভৌগলিক পরিবেশের ওপরই নির্ভর করে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে খাদ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে সামাজিক ও ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা মানুষকে প্রভাবিত করে যার ফলে কোন একটি খাদ্যকে মানুষ বর্জন করে এবং এর প্রভাব হয় সুদূরপ্রসারী। নিন্মে খাদ্য গ্রহণ সম্পর্কে সামাজিক ও ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা ইতিহাসকে কিভাবে প্রভাবিত করেছে তা আলোচনা করা হল -
প্রাচীন ইহুদী ধর্মশাস্ত্র হিব্রু বাইবেল অনুযায়ী, মোজেস পশুর চর্বি এবং শুকরের মাংস খেতে নিষেধ করেছেন। এরপর তাদের মধ্যে স্বতন্ত্রতাবোধ গড়ে ওঠে এবং তারা অন্যান্য স্থানীয় জনগোষ্ঠীর থেকে নিজেদের পৃথক ভাবতে থাকে। হিব্রু বাইবেল অনুসারে তারা এইসব খাদ্য গ্রহণ বর্জন করে যা পরম্পরাগত ভাবে চলে আসছে।
প্রাচীনকালের ভারতের ইতিহাস থেকে খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের কথা জানা যায়। সেই সময় ভারতে যে প্রতিবাদী ধর্ম আন্দোলন গড়ে উঠেছিল সেখানে গৌতম বুদ্ধ ও মহাবীর জীবহত্যা নিষিদ্ধ করেছিলেন। সমকালীন সমাজে এর গভীর প্রভাব পড়েছিল এবং সমাজের একাংশ অহিংস হয়ে উঠেছিল। যার ফলে তারা পশুর মাংস খাওয়া, পশু হত্যা বন্ধ করে, যার প্রভাব খাদ্যাভ্যাসের ক্ষেত্রে এবং সমাজজীবনে সুদূরপ্রসারী পরিবর্তন আনে।
বিভিন্ন সময়ে ভারতে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর আগমন ঘটেছে। ধীরে ধীরে তাদের খাদ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে ভারতের মানুষেরা মিশে গিয়েছিল। কিন্তু পাশাপাশি কিছু বিদেশি খাদ্য নিষিদ্ধ হয়েছিল যেমন - পেয়াজ, রসুন, মুসুর ডাল প্রভৃতি। এরফলে তৎকালীন সময়ে ভারতের এক শ্রেণির মানুষ নিরামিষাশী হয়ে পড়েছিল।
মূল্যায়ন ঃ এইভাবে বিভিন্ন সময়ে খাদ্য গ্রহণ সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা ইতিহাসকে প্রভাবিত করেছে, যার ফলে ইতিহাসের ধারা পরিবর্তিত হয়েছে।