খেলার ইতিহাস চর্চার বৈশিষ্ট্য -
সাম্প্রতিককালে নতুন সামাজিক ইতিহাস চর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হিসাবে খেলার ইতিহাস বিকাশ লাভ করেছে। খেলাধুলার ইতিহাসকে কেন্দ্র করে বৃহত্তর সমাজের বিভিন্ন বিষয় তথা রাজনৈতিক, সামাজিক অবস্থা প্রতিফলিত হয়। তাই বর্তমানে খেলাধুলার ইতিহাস বিশেষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নিন্মে খেলাধুলার ইতিহাস চর্চার বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হল -
সমাজ সম্পর্কিত তথ্য ঃ খেলার ইতিহাস থেকে কোন সমাজের মানুষের মানসিকতা, শারীরিক সক্ষমতা, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা, নারীর মর্যাদা ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে বিভিন্ন মূল্যবান তথ্য মেলে।
ঐক্য ও সম্প্রীতি স্থাপন ঃ খেলাধুলা বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি গড়ে তোলে। তাই খেলার ইতিহাসচর্চা রাষ্ট্র সমূহের মধ্যে অভ্যন্তরীণ সংহতি সম্পর্কে জানতে সাহায্য করে।
জাতীয়তাবোধ সম্পর্কিত তথ্য ঃ খেলাধুলার ইতিহাসচর্চার অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হল জাতীয়তাবাদী চেতনা ও আবেগের প্রকাশ। যেমন পরাধীন ভারতে ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে ফুটবল ক্লাব মোহনবাগান ব্রিটিশদের ইস্ট ইয়র্ককে পরাজিত করে। এই ঘটনা ভারতীয়দের মনে জাতীয়তাবাদী উন্মাদনার সৃষ্টি করেছিল।
বৈষম্য দূরীকরণ ঃ জাতিগত ও লিঙ্গবৈষম্য দূর করতে খেলার ইতিহাস চর্চার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। খেলাধুলার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ ও জাতির মধ্যে পারস্পারিক সদ্ভাব গড়ে ওঠে এবং একটি মৈত্রীর পরিবেশ সৃষ্টি করে। এছাড়া খেলাধুলার ইতিহাস চর্চার অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হল খেলাধুলা বিনোদনের মাধ্যম হিসাবে দেশ ও জাতির প্রয়োজনের উপযোগী হয়ে উঠতে পারে।
লুপ্তপ্রায় খেলার সন্ধান ঃ খেলাধুলার ইতিহাস চর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল - আধুনিক সভ্যতার চাপে গ্রামীণ এলাকার যে সকল লোকক্রিয়াগুলি আজ বিলুপ্ত প্রায় তা পুনরুদ্ধার করা। নতুন ইতিহাস চর্চার মাধ্যমে লুপ্তপ্রায় এই ক্রীড়াগুলি ইতিহাসের গবেষণার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
মূল্যায়ন ঃ সবশেষে বলা যায় যে, নতুন সামাজিক ইতিহাসের মাধ্যমে খেলাধুলার ইতিহাসচর্চার গুরুত্ব বেড়েছে। ফলে ইতিহাস হয়ে উঠেছে সর্বজনীন, সর্বজনগ্রাহ্য এবং সমাজবিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
আরও পড়ুন ঃ