বামাবোধিনী পত্রিকায় বাংলার সমকালীন সমাজের কীরূপ প্রতিফলন ঘটেছে

প্রিয় ছাত্রছাত্রী, আজ আমি তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করব "বামাবোধিনী পত্রিকায় উনিশ শতকের বাংলা সমাজের কি প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায়" / "বামাবোধিনী পত্রিকায় বাংলার সমকালীন সমাজের কিরূপ প্রতিফলন ঘটেছে" -এই প্রশ্নটি।

বামাবোধিনী পত্রিকায় উনিশ শতকের বাংলা সমাজের প্রতিফলন -

নারীদের জন্য প্রকাশিত প্রথম বাংলা মাসিক পত্রিকা হল 'বামাবোধিনী পত্রিকা'। এই পত্রিকায় সমকালীন বাংলা সমাজের সার্বিক প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায়। 

প্রকাশকাল ও প্রকাশক ঃ ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে বামাবোধিনী পত্রিকা প্রথম প্রকাশ করা হয়। এই পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ও প্রকাশক ছিলেন উমেশ চন্দ্র দত্ত। 

প্রকাশকের উদ্দেশ্য ঃ নারীদের সম্পর্কে বিভিন্ন উদ্দেশ্য সামনে রেখে এই পত্রিকা প্রকাশ করা হয়। যেমন - 

     (i) সমাজে নারীদের উন্নতি সাধন ঘটানো। 

     (ii) নারীদের মধ্যে শিক্ষার বিস্তার ঘটানো। 

     (iii) সমাজে প্রচলিত কুসংস্কারগুলি দূর করা।

সমাজের প্রতিফলন ঃ 

    (i) নারী শিক্ষা ঃ উনিশ শতকে বাংলার সমাজ নারী শিক্ষার বিরোধী ছিল। সেই সময় রক্ষণশীল সমাজ মনে করতো শিক্ষিত মহিলারা হল অশুভ। কিন্তু বামাবোধিনী পত্রিকা তার প্রথম সংখ্যাতেই সকল নারীদের শিক্ষার প্রসারে দাবি জানিয়েছিল। এই পত্রিকার প্রতি সংখ্যার সূচনাতে লেখা থাকতো, কন্যাকে পালন করিবেক ও যত্নের সহিত শিক্ষা দিবেক। 

     (ii) সামাজিক কুসংস্কার ঃ বামাবোধিনী পত্রিকা থেকে তৎকালীন সমাজে প্রচলিত বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহ, কৌলিন্য প্রথা, বৈধব্য যন্ত্রণা সম্পর্কে নানা তথ্য জানা যায়। বামাবোধিনী পত্রিকা সমাজে প্রচলিত এই সব কুসংস্কারগুলির তীব্র বিরোধিতা জানায়। 

     (iii) নারীদের অবস্থা ঃ বামাবোধিনী পত্রিকা থেকে জানা যায় যে, তৎকালীন সমাজে নারীদের অবস্থা  অত্যন্ত শোচনীয় ছিল। পুরুষ শাসিত সমাজে নারীদের অবস্থা ছিল খুবই খারাপ। নারীরা গৃহের অভ্যন্তরে জীবন কাটাতে বাধ্য হত এবং সমাজের বিভিন্ন কার্যকলাপ ও বিশেষ অধিকার, মর্যাদা থেকে তারা বঞ্চিত ছিল। 

     (iv) নারীদের বিভিন্ন কার্যকলাপ ঃ ঠাকুরবাড়ির অন্তর মহলের কথা বামাবোধিনী পত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশিত হত। নারীদের লেখা গল্প, কবিতা প্রভৃতি গুরুত্বের সাথে প্রকাশ করা হতো। 

মূল্যায়ন ঃ বামাবোধিনী পত্রিকার প্রথম সংখ্যার অঙ্গীকার অনেকটা সফল হয়েছিল। পরবর্তীকালে নারীরা শিক্ষায়, রাজনৈতিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে

Post a Comment

Previous Post Next Post