বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও চিকিৎসা বিদ্যার ইতিহাস -
মানুষের জয়যাত্রার কাহিনী ইতিহাসের বিষয়বস্তু, মানুষের আগুন জ্বালাতে শেখা, বনের আগুন ঘরে নিয়ে আসা, চাকা আবিষ্কার, এই সবের মধ্যে দিয়ে মানুষের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানের সূচনা হয়েছিল। তারপর রোগব্যাধির হাত থেকে মুক্তি ও রোগ নিরাময়ের পদ্ধতি শেখার মধ্যে দিয়ে চিকিৎসাবিদ্যার জন্ম হয়েছিল।
বিজ্ঞান ঃ বিভিন্ন সময়ের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার, বৈজ্ঞানিকের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ, প্রতিকূলতা, সমাজে বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের সুফল প্রভৃতি নিয়ে চর্চা হল বিজ্ঞানের ইতিহাস। জে ডি বার্নালের বিজ্ঞানের ইতিহাস সেরকমই একটা গ্রন্থ। অপরসায়নবিদ বয অ্যালকেমিস্টদের বিভিন্ন আবিষ্কার, পদার্থবিদ্যা সংক্রান্ত গবেষণা এবং তার অগ্রগতি, গণিতের উন্নতি ও সমাজের সঙ্গে তার যোগসূত্র ইত্যাদি বিজ্ঞানের ইতিহাসের বিষয়।
প্রযুক্তিবিদ্যা ঃ চাকা আবিষ্কারের মধ্যে দিয়ে মানুষের প্রযুক্তিবিদ্যার সূচনা হয়। তারপর নদীতে বাঁধ দিয়ে জল ধরে রাখা ও চাষবাস করা, মন্দির তৈরি, বাড়িঘর ও প্রাসাদ নির্মাণের মধ্যে দিয়ে তার বিকাশ ঘটে। নগর প্রতিষ্ঠা, নৌকা-জাহাজ তৈরি, পিরামিড তৈরি, নৌকায় পালের ব্যবহার, গাড়ি তৈরি প্রভৃতি প্রযুক্তিবিদ্যার গতিকে ত্বরান্বিত করেছিল। শিল্পবিপ্লবের যুগে প্রযুক্তিবিদ্যার অভূতপূর্ব বিকাশ ঘটেছিল। প্রযুক্তিবিদ্যার উন্নতির ফলে যন্ত্রের ব্যাপক ব্যবহার হয়। নতুন নতুন ক্ষেত্রে আবিষ্কারের ফলে প্রযুক্তিবিদ্যার ধারা আজও অব্যাহত রয়েছে।
চিকিৎসাবিদ্যা ঃ প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের চিকিৎসাবিদ্যা সম্পর্কে কমবেশি ধারণা ছিল। কোন প্রতিষ্ঠান বা গ্রন্থ না থাকলেও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বহু চিকিৎসক বিখ্যাত হয়েছেন। গ্রিসের হিপোক্রিটাসের মত ভারতে চরক, সুশ্রুত ও ধ্বন্বন্তরি চিকিৎসার ক্ষেত্রে তাদের অবদান রেখেছেন। আরবে, ইতালিতে চিকিৎসার উন্নতি হয়েছিল, উইলিয়াম হার্ভে রক্ত সঞ্চালন পদ্ধতি আবিষ্কার করলে চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি ঘটে।
মূল্যায়ন ঃ বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসারবিদ্যার বিকাশ ও প্রয়োগ সমাজের ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছিল। এই বিষয়গুলি সম্পর্কে বিভিন্ন দেশের সরকার কি ধরণের উদ্যোগ নিয়েছিল, প্রয়োগের সময় কি কি প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে চেয়েছিলেন, সেই সব কিছুই ইতিহাসের পাতায় স্থান পেয়েছে।