চুয়াড় বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো

চুয়াড় বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য -

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনকালে মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, ধলভূম, মানভূম ইত্যাদি অঞ্চলের কৃষক ও উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষেরা ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল তাকে চুয়াড় বিদ্রোহ বলে। এই বিদ্রোহ ১৭৬৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় ৩০ বছর ধরে চলেছিল। নিম্নে চুয়াড় বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করা হল -

উপজাতি ও কৃষক বিদ্রোহ ঃ চুয়াড় বিদ্রোহ ছিল উপজাতি ও কৃষক সম্প্রদায়ের বিদ্রোহ। ব্রিটিশ সরকারের উচ্চহারে রাজস্ব আদায়ের সিদ্ধান্ত এই বিদ্রোহের অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে পরিগণিত।

ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহ ঃ চুয়াড় বিদ্রোহ ছিল ব্রিটিশ বিরোধী অভ্যুত্থান। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে এই বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল। সশস্ত্র উপজাতি চুয়াড়রা বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক লুণ্ঠন ও হত্যালীলা চালায়

জমিদার ও কৃষক সম্মিলিত বিদ্রোহ ঃ ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে চুয়াড় বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিল এই অঞ্চলের জমিদাররা। বিদ্রোহের নেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন ঘাটশিলার জমিদার জগন্নাথ সিং ধল, রায়পুরের জমিদার দুর্জন সিংহ, কর্ণগড়ের রানী শিরোমনি প্রমূখ।

দীর্ঘস্থায়ী বিদ্রোহ ঃ চুয়াড় বিদ্রোহ দীর্ঘ সময় ধরে চলেছিল। এই বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল ১৭৬৮ খ্রিস্টাব্দে এবং শেষ হয়েছিল ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে।

মূল্যায়ন ঃ চুয়াড় বিদ্রোহ দমনের উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ সরকার সামরিক বল ও কূটকৌশল প্রয়োগ করেছিল। অবশেষে ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দে ১৮ নম্বর রেগুলেশন জারির মাধ্যমে উপদ্রুত অঞ্চলগুলিকে নিয়ে জঙ্গলমহল নামে একটি নতুন জেলা গঠন করা হয়।

আরও পড়ুন ঃ

Post a Comment

Previous Post Next Post