মুন্ডা বিদ্রোহের গুরুত্ব বা ফলাফল -
১৮৯৯-১৯০০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ বিরসা মুন্ডার নেতৃত্বে মুন্ডা বিদ্রোহ ঘটেছিল। বিভিন্ন কারণে মুন্ডা বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী এই আন্দোলনের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। নিম্নে মুন্ডা বিদ্রোহের গুরুত্ব বা ফলাফল আলোচনা করা হল -
প্রজাস্বত্ব আইন পাশ ঃ মুন্ডা বিদ্রোহের ফলে ব্রিটিশ সরকার মুন্ডাদের অভাব-অভিযোগ দূর করতে সচেষ্ট হয়। এজন্য সরকার ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে ছোটনাগপুর প্রজাস্বত্ব আইন পাশ করে।
খুৎকাঠি প্রথার স্বীকৃতি ঃ ছোটনাগপুরে প্রজাস্বত্ব আইনের মাধ্যমে মুন্ডাদের খুৎকাঠি প্রথা বা জমির যৌথ মালিকানা প্রথাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
বেগার প্রথার অবসান ঃ জমিদার, মহাজন ও ঠিকাদাররা মুন্ডাদের বেগার শ্রম দিতে বাধ্য করত। এই বেগার প্রথা মুন্ডা বিদ্রোহের অন্যতম কারণ ছিল। ব্রিটিশ সরকার মুন্ডাদের বেগার খাটানোর প্রথাকে নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করে।
বিরসা সম্প্রদায়ের আত্মপ্রকাশ ঃ মুন্ডা বিদ্রোহের ফলে বিরসা মুন্ডার ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল। বিদ্রোহের পর বিরসা সম্প্রদায় নামে একটি মুন্ডাগোষ্ঠী গড়ে উঠেছিল, যারা বিরসা মুন্ডাকে ভগবানের মত সম্মান করত।
মুন্ডাদের রাজনৈতিক চেতনা বৃদ্ধি ঃ মুন্ডা বিদ্রোহের ফলে মুন্ডাদের মধ্যে রাজনৈতিক চেতনার বিকাশ ঘটেছিল।
অন্যান্য উপজাতিদের মধ্যে প্রভাব ঃ মুন্ডা বিদ্রোহের প্রভাব ছোটনাগপুর অঞ্চলের অন্যান্য উপজাতির মানুষের মধ্যেও পড়েছিল। এরফলে ওঁরাও -রা তাদের সৃষ্ট কৃষিজমির মালিকানা পাওয়ার জন্য 'তানাভকৎ' আন্দোলন করেছিল।
মূল্যায়ন ঃ মুন্ডা বিদ্রোহের নেতা বিরসা মুন্ডা উপজাতির স্বার্থরক্ষার জন্য যে আদর্শ প্রচার করেছিল তাতে মুন্ডারা সচেতন হয়ে উঠেছিল। এপ্রসঙ্গে ঐতিহাসিক ড. সুমিত সরকার বলেছেন, বিরসা মুন্ডা একজন জাতীয়তাবাদী নেতা ছিলেন।
আরও পড়ুন ঃ