ঋক বৈদিক যুগে বর্ণ ব্যবস্থা বা চতুঃবর্ণ প্রথা সম্পর্কে লেখ।
ভারতের ইতিহাসের আর্য সভ্যতার গুরুত্ব অপরিসীম। আর্য হল এক প্রাচীন ভাষাগোষ্ঠী। ঋক বেদ ও তার সমসাময়িক অন্যান্য সূত্র থেকে আর্যদের সামাজিক জীবন সম্পর্কে জানা
যায়। এই সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ছিল চতুঃবর্ণ প্রথা বা বর্ণব্যবস্থা।
ঋকবেদ
অনুসারে আর্য সমাজ চারটি বর্ণে বিভক্ত ছিল। যথা – ব্রাহ্মণ,
ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র। নিম্নে চারটি বর্ণ
সম্পর্কে আলোচনা করা হল –
ব্রাহ্মণ ঃ বৈদিক যুগে যাগযজ্ঞ, পূজা-অর্চনা, শাস্ত্রপাঠ, বিদ্যাদান ইত্যাদির সাথে যারা যুক্ত থাকতেন তাদের ব্রাহ্মণ বলা হত।
ক্ষত্রিয় ঃ যারা যুদ্ধবিগ্রহ, রাজ্য শাসন, প্রজাপালন ইত্যাদির সাথে যুক্ত থাকতেন তাদের ক্ষত্রিয় বলা হত।
বৈশ্য ঃ বৈদিক যুগে যারা পশুপালন, কৃষিকাজ, শিল্পক্রম, ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি করতেন তাদের বৈশ্য বলা হত।
শূদ্র ঃ যারা উপরের তিনটি শ্রেণিকে সেবা প্রদান করতেন তাদের শূদ্র বলা হত
আর্য সমাজে বর্ণ বিভাজন জন্মভিত্তিক বা বংশানুক্রমিক ছিল না, কর্মভিত্তিক ছিল। এই সময় সমাজে অস্পৃশ্যতা ছিল না। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্য – এই তিনটি সম্প্রদায়ের মধ্যে অন্তর্বিবাহ হতে পারত। অবশ্য ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয় শ্রেণির প্রতিপত্তি বেশি ছিল। আবার বৈশ্য জনগণ যেকোন শ্রেণিতে স্থান পেতে পারত।
মূল্যায়ন ঃ ঋক বৈদিক যুগে বর্ণব্যবস্থা বা জাতিভেদ প্রথা ছিল একটি বিতর্কিত বিষয়। মনে করা হয়, কৃষ্ণকায় ও পরাজিত অনার্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে নিজেদের পার্থক্য বোঝানোর জন্য আর্যগণ ‘বর্ণ’ শব্দটি ব্যবহার করত।