বাংলার ফরাজি আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য -
বাংলায় ফরাজি আন্দোলনের প্রবর্তক ছিলেন হাজি শরিয়ৎউল্লাহ। তাঁর মৃত্যুর পর ফরাজি আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মহম্মদ মহসিন বা দুদু মিঞা ও তাঁর পুত্র নোয়া মিঞা। নিম্নে বাংলার ফরাজি আন্দোলনের বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করা হল -
ইসলামের পুনরুজ্জীবন বা শুদ্ধিকরণ ঃ ইসলাম ধর্মের শুদ্ধিকরণ করার উদ্দেশ্য ফরাজি আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। শরিয়ৎউল্লাহ তাঁর অনুগামীদের ইসলামের পবিত্র আদর্শ মেনে চলার কথা বলেছিলেন।
জমিদার ও নীলকরবিরোধী আন্দোলন ঃ ফরাজি আন্দোলন জমিদার ও নীলকর বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়েছিল। আন্দোলনকারীরা জমিদার ও নীলকরদের কুঠি আক্রমণ করেছিল।
নিম্নবর্গের মানুষের প্রাধান্য ঃ ফরাজি আন্দোলনে নিম্নবর্গের মুসলমান ও হিন্দু কৃষকদের প্রাধান্য ছিল। এই কৃষকরা জমিদার ও নীলকরদের দ্বারা বিভিন্নভাবে শোষিত হত।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন ঃ ফরাজি আন্দোলনের নেতারা বাংলায় ফরাজি-খিলাফৎ নামে একটি স্বাধীন প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন। তাদের নিজস্ব আদালত ছিল। এই সকল ব্রিটিশবিরোধী কার্যকলাপের জন্য ব্রিটিশ সরকার তাদের দমন করার চেষ্টা করে।
মুসলিম সংখ্যাধিক্য ঃ ফরাজি আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা এবং প্রাধান্যের দিক থেকে মুসলিম সম্প্রদায়ই এগিয়ে ছিল। এক্ষেত্রে অন্যান্য ধর্মসম্প্রদায়গুলির ভূমিকা ছিল নগণ্য।
মূল্যায়ন ঃ ফরাজি আন্দোলন শেষপর্যন্ত সফল হয়নি কিন্তু তা সত্ত্বেও এই আন্দোলনে কৃষকদের সংঘবদ্ধতার যে চিত্র ফুটে উঠেছিল, পরবর্তীকালের পাবনা বিদ্রোহে তা স্পষ্টরূপে প্রতিফলিত হয়েছিল।