সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহের কারণ গুলি কি কি

সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহের কারণ -

১৭৬৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালে বাংলা ও বিহারে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী গিরি ও দশনামী সম্প্রদায়ভুক্ত সন্ন্যাসী ও মাদারি সম্প্রদায়ভুক্ত ফকিরদের নেতৃত্বে যে কৃষক বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল, তাকে সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ বলে। নিম্নে সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহের কারণ আলোচনা করা হল -

রাজস্বের চাপ ঃ ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি উচ্চহারে রাজস্ব বৃদ্ধি করায় কৃষিজীবী সন্ন্যাসী ও ফকিররা করভারে জর্জরিত হয়ে পড়ে। তাছাড়া কোম্পানির কর্মচারীরা প্রায়ই ব্যবসায়ী সন্ন্যাসী-ফকিরদের কাছ থেকে রেশম ও রেশমজাত পণ্য বলপূর্বক ছিনিয়ে নিতো।

ইজারাদারি শোষণ ঃ সন্ন্যাসী-ফকিরদের অধিকাংশ ছিল কৃষিজীবী। অধিক খাজনা আদায়ের জন্য ইংরেজ কোম্পানির ইজারাদারদের শোষণ কৃষকদের ক্ষিপ্ত করে তুলেছিল।

তীর্থকর আরোপ ঃ সন্ন্যাসীরা মাঝেমধ্যেই দলবদ্ধ ভাবে তীর্থে যেত। কোম্পানির সরকার তাদের উপর তীর্থকর ধার্য করে এবং ফকিরদেরও দরগায় যেতে বাধা দেয়।

বেকারত্ব ঃ বাংলায় ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে নবাব নবমাত্র শাসকে পরিণত হয়। নবাবের সৈন্য সংখ্যা হ্রাস করা হলে এই বেকার সৈনিকরা কৃষিজীবীতে পরিণত হয়। ইংরেজদের জবরদস্তিমূলক ভূমি রাজস্ব আদায়ের প্রতিক্রিয়ায় প্রাক্তন এই সৈনিকরা সন্ন্যাসী ও ফকিরের বেশে সশস্ত্র বিদ্রোহে যোগদান করে।

নির্যাতন ঃ সন্ন্যাসী ও ফকরিদের উপর বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি তাদেরকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারণে নির্মমভাবে হত্যা করা হতো।

জমিদারদের আর্থিক অবস্থার বিপন্নতা ঃ ব্রিটিশ সরকার জমিদারদের উপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপালে জমিদারদের আর্থিক অবস্থা বিপন্ন হয়ে পড়েছিল। ফলে তারা আগের মতো সন্ন্যাসীদের অর্থ সাহায্য করতে পারত না। এতে সন্ন্যাসীদের জীবন নির্বাহ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। ফলে তারা ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্রোহের পথে অগ্রসর হয়।

আরও পড়ুন ঃ

Post a Comment

Previous Post Next Post