বারাসাত বিদ্রোহের গুরুত্ব আলোচনা করো

বারাসাত বিদ্রোহের গুরুত্ব / বাংলায় ওয়াহাবি আন্দোলনে তিতুমিরের নেতৃত্বে ইংরেজবিরোধী বিদ্রোহের গুরুত্ব -

বাংলায় ওয়াহাবি আন্দোলন-এর প্রাণপুরুষ ছিলেন মির নিশার আলি বা তিতুমির। তিনি জমিদার, মহাজন, নীলকর ও ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন এবং নিজেকে বারাসাত অঞ্চলের বাদশাহ বলে ঘোষণা করেছিলেন। এই প্রসঙ্গে ড. শশীভূষণ চৌধুরী বলেছেন যে, ইংরেজ আমলে সরকার বিরোধী যেসব আন্দোলন গড়ে উঠেছিল তার মধ্যে ওয়াহাবি আন্দোলন ছিল ঘোর ব্রিটিশ বিরোধী একটি আন্দোলন। নিম্নে বারাসাত বিদ্রোহের গুরুত্ব গুলি আলোচনা করা হল - 

শোষণের প্রতিবাদ ঃ তিতুমিরের নেতৃত্বে পরিচালিত ওয়াহাবি আন্দোলন ধর্ম সংস্কার আন্দোলন হিসাবে শুরু হলেও কালক্রমে এটি কৃষক বিদ্রোহের রূপ ধারণ করেছিল। এই বিদ্রোহের মূল চালিকাশক্তি ছিল শোষিত কৃষকরা এবং এই আন্দোলন ছিল ধর্মের আদর্শে অনুপ্রাণিত একটি কৃষক বিদ্রোহ।

ব্রিটিশ শাসন অবসানের প্রেরণা ঃ তিতুমির বারাসাত, বসিরহাটের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটিয়ে নিজেকে স্বাধীন 'বাদশাহ' বলে ঘোষণা করেছিলেন। লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক প্রেরিত ইংরেজ বাহিনীর বিরুদ্ধে তিনি প্রাণপণ সংগ্রাম করেছিলেন।

জমিদার ও নীলকরদের অত্যাচারের প্রতিবাদ ঃ অত্যাচারী জমিদার ও নীলকর সাহেবদের হাতে নির্যাতিত মানুষদের সংঘটিত করে তিতুমির বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। তাঁর বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল পুড়ার জমিদার কৃষ্ণদেব রায়ের অত্যাচারের প্রতিবাদ হিসাবে।

শ্রেণিসংগ্রাম ঃ তিতুমিরের বারাসাত বিদ্রোহ ছিল শোষক শ্রেণীর বিরুদ্ধে শোষিত হিন্দু ও মুসলমানদের স্বতঃস্ফূর্ত বিদ্রোহ। ড. রনজিৎ গুহ বলেছেন যে, এই আন্দোলন ছিল নিম্নবর্গের মানুষের রাজনৈতিক সংগ্রাম ও মর্যাদার আন্দোলন।

Post a Comment

Previous Post Next Post