কার্যকরী যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভাষার ভূমিকা আলোচনা করো (Discuss the role of language in effective communication.)
আমরা জানি ভাষা আমাদের সামাজিক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। তবে সেক্ষেত্রে ভাষাকে তার ব্যাপকতার অর্থে গ্রহণ করতে হবে। অর্থাৎ ভাষা শুধুমাত্র কথ্য বা মৌখিক ভাবে উচ্চারিত ধ্বনিমালা নয়। যা কিছু আমাদের মানসিক ভাবকে অন্যের কাছে সার্থক রুপে পৌঁছে দেয় তাই ভাষা। যোগাযোগ প্রক্রিয়াকে ভাষার সংজ্ঞার মূল উপাদান হিসাবে গ্রহণ করা হয়েছে, ভাষাকে যোগাযোগ প্রক্রিয়ার উপাদান নয়।
এই অর্থে সমস্ত মৌখিক, লিখিত, চিত্র, সংকেত, ইশারা, ইঙ্গিত, মুখের ও শরীরের অভিব্যক্তি সবই আমাদের পারস্পারিক যোগাযোগের ভাষা হিসাবে কাজ করে। আর শিক্ষার ক্ষেত্রে, শ্রেণীকক্ষের শিখন ও শিক্ষণের ক্ষেত্রে, শিক্ষার্থীদের পারস্পারিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে এর প্রত্যেকটির যথেষ্ট কার্যকর ভূমিকা আছে। এমনকি মৌন থাকাও উপযুক্ত পরিস্থিতিতে ভাষার কাজ করে।
সাধারনভাবে যোগাযোগ (Communication) কথাটির অর্থ একটি যান্ত্রিক প্রক্রিয়া। কারণ একজন ব্যক্তি যা অন্যকে জানাতে ইচ্ছুক তার একটি সাংকেতিক অথচ অর্থবহ রুপ দান করে। যদি এই রূপটি মুখের উচ্চারিত শব্দও হয় তবুও তা একটি সংকেত (Code) ছাড়া আর কিছু নয়। সংকেতটি উদ্দিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের কানে পৌঁছালে যদি তার যথাযথ বিসংকেতায়ন (Decoding) বা অর্থবোধ হয় তবেই যোগাযোগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়। সুতরাং, যোগাযোগ অর্থ সংকেত প্রেরক এবং গ্রহীতার মধ্যে অভিন্ন সংকেতের বিনিময় (Exchange of common code between sender and the receiver.)
প্রেরকের পাঠানো সংকেত গ্রহীতার কাছে পৌঁছালে তার মধ্যে যে প্রতিক্রিয়া হয়, তাই দিয়ে বিচার করা যায় যোগাযোগের সার্থকতা। ব্যর্থ যোগাযোগ প্রকৃত যোগাযোগ নয়। এই বিষয়টি বিদ্যালয়ে এবং শ্রেণীকক্ষের পরিপ্রেক্ষিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।