প্রশ্ন ঃ পাঠক্রম বিস্তৃতিতে ভাষার ভূমিকা আলোচনা করো (Write down the role of language across curriculum.)
অথবা,
প্রশ্ন ঃ 'পাঠক্রমব্যাপী ভাষাশিক্ষা' ধারণাটি ব্যক্ত করো (Explain the concept of language across the curriculum.)
অথবা,
প্রশ্ন ঃ পাঠক্রম ও ভাষার সম্পর্ক আলোচনা করো (Discuss the relation between curriculum and language.)
উত্তর ঃ
পাঠক্রমের সঙ্গে ভাষা ওতপ্রোতভাবে জড়িত আছে। কারণ পাঠক্রম চর্চার অন্যতম প্রধান মাধ্যম হল ভাষা। পাঠক্রম মূলত একটি বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য নির্মিত ও নির্বাচিত পাঠ্যসূচির সমন্বয়। প্রতিটি পাঠক্রমের কিছু উদ্দেশ্য বর্তমান থাকে। যেমন - জ্ঞানবৃদ্ধি, দক্ষতা বৃদ্ধি, যোগ্যতা বৃদ্ধি, চিন্তার বিকাশ, ব্যক্তিত্বের বিকাশ, মননের প্রসার, আবেগ ও চেতনার বিকাশ ইত্যাদি।
উপরিউক্ত উদ্দেশ্যগুলি থেকে সহজেই বোঝা যায় যে, পাঠক্রমের অন্তর্নিহিত দৃষ্টিকোণ অনেক ব্যাপক। এর প্রধান কাজ হল প্রতিটি শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশ সাধন করা। আর এই সার্বিক বিকাশ সাধনের জন্য ভাষার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সেই কারনেই পাঠক্রমে ভাষার প্রাসঙ্গিকতা এবং ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নে পাঠক্রমে ভাষার ভূমিকা বা পাঠক্রম ও ভাষার সম্পর্ক আলোচনা করা হল -
১. পাঠক্রমের শব্দভাণ্ডার সুনিশ্চিত হতে হবে।
২. পাঠক্রমে ভাষার নির্বাচন সাবলীল হতে হবে।
৩. বিষয় অনুযায়ী ভাষা নির্বাচন বা ভাষার জটিলতার মাত্রা নির্ধারণ করা উচিত।
৪. জ্ঞান বিষয়ের বইগুলি রচনার সময় ভাষা সহজ-সরল করতে হবে।
৫. সমালোচনামূলক লেখার ক্ষেত্রে ভাষা তুলনামূলক ভাবে জটিল এবং সংগতিপূর্ণ হতে হবে।
৬. অনুবাদমূলক পুস্তক হলে ভাষানুবাদের সঙ্গে ভাবানুবাদ হতে হবে।
৭. সাহিত্য বিষয়ের পুস্তকের ভাষা হবে প্রতীকী।
৮. পাঠক্রমের সুনিশ্চিত ভাষাই পারে কোন শিক্ষার্থীর সকল প্রকার সম্ভাবনার বিকাশ ঘটাতে।
৯.ভাষা সহজ ও সরল হলে জ্ঞান বিনিময় ও সঞ্চারণ খুব তাড়াতাড়ি হবে। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা অল্প সময় ব্যয় করে অধিক জ্ঞান লাভ করতে সক্ষম হবে।
১০. ভাষা সহজ সরল হলে কম সময়ের মধ্যেই শিক্ষার্থীর সেই বিষয়ে জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।
১১. জ্ঞান অর্জন এবং তার প্রয়োগ যখন সাবলীল ভাবে সহজ এবং সরল ভাষায় হয় তখন তা সকল শিক্ষার্থীর চেতনার বিকাশে সহায়ক হয়।
১২. শিক্ষার্থীর চেতনার বিকাশের সাথে সাথে যাতে তার অন্তরের সকল সম্ভাবনা বেরিয়ে আসতে পারে তার জন্য ভাষাকে যথা সম্ভব শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে তুলতে হবে।
সবশেষে বলা যায় যে, পাঠক্রমে সুনিশ্চিত ও সংগতিপূর্ণ ভাষা অন্তর্ভুক্তির মধ্যে দিয়েই কোন শিক্ষার্থীর জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। ফলে কোন শিক্ষার্থী সব দিক থেকে বিকশিত হতে পারে।